বস্তুর উপর তাপের প্রভাব
সূচিপত্র
ভৌত রাশি ও পরিমাপ
গতি
বল
কাজ, ক্ষমতা ও শক্তি
পদার্থের অবস্থা ও চাপ
বস্তুর উপর তাপের প্রভাব
তরঙ্গ ও শব্দ
আলোর প্রতিফলন
আলোর প্রতিসরণ
দশম অধ্যায় স্থিরতড়িৎ
একাদশ অধ্যায় চল তড়িৎ
তড়িতের চৌম্বক ক্রিয়া
আধুনিক পদার্থবিজ্ঞান ও ইলেকট্রনিক্স
জীবন বাঁচাতে পদার্থবিজ্ঞান
সূত্রাবলি
গতি
বল
কাজ, ক্ষমতা ও শক্তি
পদার্থের অবস্থা ও চাপ
বস্তুর উপর তাপের প্রভাব
তরঙ্গ ও শব্দ
আলোর প্রতিফলন
আলোর প্রতিসরণ
দশম অধ্যায় স্থিরতড়িৎ
একাদশ অধ্যায় চল তড়িৎ
তড়িতের চৌম্বক ক্রিয়া
আধুনিক পদার্থবিজ্ঞান ও ইলেকট্রনিক্স
জীবন বাঁচাতে পদার্থবিজ্ঞান
সূত্রাবলি
[তাপ একপ্রকার শক্তি যা পদার্থের অণুর গতির
সাথে সম্পর্কিত। তাপমাত্রা হচ্ছে তাপশক্তি কোন দিকে প্রবাহিত হবে তার একটি
নির্দেশক। তাপ প্রয়োগে বা অপসারণে কঠিন পদার্থের আকারের পরিবর্তন ঘটে, তরল
পদার্থের আয়তন পরিবর্তিত হয় এবং বায়বীয় পদার্থের আয়তন ও চাপের পরিবর্তন ঘটে।
তাপ প্রয়োগে বা অপসারণে পদার্থ এক অবস্থা থেকে অন্য অবস্থায় রূপান্তরিত হয়।
বস্তুর উপর তাপের এ সকল প্রভাব এই অধ্যায়ে আলোচনা করা হবে।]
Contents
·
12 ৬.১২ গলনের সুপ্ততাপ ও বাষ্পীভবনের
সুপ্ততাপLatent heat of fusion and Latent heat of vaporisation
তাপ:
তাপ হলো এক প্রকার শক্তি যা ঠান্ডা ও গরমের অনুভূতি জাগায়। তাপ উষ্ণতর বস্তু থেকে শীতলতর বস্তুর দিকে প্রবাহিত হয়। সুতরাং উষ্ণতার পার্থক্যের জন্য যে শক্তি এক বস্তু থেকে অন্য বস্তুতে প্রবাহিত হয় তাকে তাপ বলে। পদার্থের অণুগুলো সব সময় গতিশীল অবস্থায় থাকে। তাই এদের গতিশক্তি আছে। কোনো পদার্থের মোট তাপের পরিমাণ এর মধ্যস্থিত অণুগুলোর মোট গতিশক্তির সমানুপাতিক। কোনো বস্তুতে তাপ প্রদান করা হলে অণুগুলোর গতি বেড়ে যায় ফলে গতিশক্তিও বেড়ে যায়।
তাপের একক: SI পদ্ধতিতে তাপের একক হলো জুল (J)। পূর্বে তাপের একক হিসাবে ক্যালরি (Cal) ব্যবহৃত হতো। ক্যালরি এবং জুলের মধ্যে সম্পর্ক হলো 1 Cal = 4.2 J।
তাপ হলো এক প্রকার শক্তি যা ঠান্ডা ও গরমের অনুভূতি জাগায়। তাপ উষ্ণতর বস্তু থেকে শীতলতর বস্তুর দিকে প্রবাহিত হয়। সুতরাং উষ্ণতার পার্থক্যের জন্য যে শক্তি এক বস্তু থেকে অন্য বস্তুতে প্রবাহিত হয় তাকে তাপ বলে। পদার্থের অণুগুলো সব সময় গতিশীল অবস্থায় থাকে। তাই এদের গতিশক্তি আছে। কোনো পদার্থের মোট তাপের পরিমাণ এর মধ্যস্থিত অণুগুলোর মোট গতিশক্তির সমানুপাতিক। কোনো বস্তুতে তাপ প্রদান করা হলে অণুগুলোর গতি বেড়ে যায় ফলে গতিশক্তিও বেড়ে যায়।
তাপের একক: SI পদ্ধতিতে তাপের একক হলো জুল (J)। পূর্বে তাপের একক হিসাবে ক্যালরি (Cal) ব্যবহৃত হতো। ক্যালরি এবং জুলের মধ্যে সম্পর্ক হলো 1 Cal = 4.2 J।
কাজ:
টেবিলে রক্ষিত তিনটি পাত্রে A, B, C লেবেল দাও। পাত্রগুলোর A-তে কক্ষ তাপমাত্রার পানি এবং C-তে বেশ গরম পানি (তবে তোমার হাতে সহনীয়) নাও। B-তে খানিকটা গরম ও কক্ষ তাপমাত্রার পানি মেশাও। এবার A-পাত্রে তোমার ডান হাত এবং C- পাত্রে বাম হাত ডুবাও। এক মিনিট পর হাত দুটি উঠাও এবং একসাথে দুই হাত B-পাত্রে ডুবাও। এবার তোমার দুই হাতের অনুভূতি কী ? |
যদিও C- পাত্রে একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রার
পানি আছে তবুও ডান হাতে গরম এবং বাম হাতে ঠান্ডা অনুভূত হবে। কারণ ডান হাত আগে যে
পানির মধ্যে ডুবানো ছিল তার চেয়ে Bএর পানির তাপমাত্রা বেশি। অনুরূপভাবে বাম হাতে
ঠান্ডা অনুভূত হবে কারণ বাম হাত আগে যে পানির মধ্যে ডুবানো ছিল তার চেয়ে Bএর
পানির তাপমাত্রা কম।
তাপমাত্রা
তাপমাত্রা হচ্ছে কোনো বস্তুর এমন এক তাপীয় অবস্থা যা নির্ধারণ করে ঐ বস্তুটি অন্য বস্তুর তাপীয় সংস্পর্শে এলে বস্তুটি তাপ হারাবে না গ্রহণ করবে।
তাপমাত্রা
তাপমাত্রা হচ্ছে কোনো বস্তুর এমন এক তাপীয় অবস্থা যা নির্ধারণ করে ঐ বস্তুটি অন্য বস্তুর তাপীয় সংস্পর্শে এলে বস্তুটি তাপ হারাবে না গ্রহণ করবে।
তাপমাত্রাকে তরলের মুক্ত তলের সাথে তুলনা করা
যেতে পারে। আমরা জানি উচ্চতর তল থেকে তরল সর্বদা নিম্নতর তলের দিকে প্রবাহিত হয়।
চিত্রে A পাত্রের তরলের উচ্চতা B পাত্রের তরলের উচ্চতার চেয়ে বেশি। কিন্তু A
পাত্রে তরলের পরিমাণ কম এবং Bপাত্রে তরলের পরিমাণ বেশি। স্টপ কক ঝখুলে দিলে A
পাত্র থেকে B পাত্রে তরল প্রবাহিত হতে থাকবে যতক্ষণ না উভয় পাশে তরলের উচ্চতা
সমান হয়। তেমনিভাবে তাপীয় সংযোগ স্থাপন করলে উষ্ণতর বস্তু থেকে শীতলতর বস্তুতে
তাপ প্রবাহিত হয় যতক্ষণ না উভয়ের তাপমাত্রা সমান হয়।
যে বস্তুর তাপমাত্রা বেশি সে তাপ হারায় আর যে বস্তুর তাপমাত্রা কম সে তাপ গ্রহণ করে। তাপমাত্রা পরিমাপের যন্ত্রের নাম থার্মোমিটার।
তাপমাত্রার একক: আন্তর্জাতিক পদ্ধতিতে তাপমাত্রার একক কেলভিন (K)।
কেলভিন: যে নির্দিষ্ট তাপমাত্রা ও চাপে পানি তিন অবস্থাতেই অর্থাৎ বরফ, পানি এবং জলীয় বাষ্পরূপে অবস্থান করে তাকে পানির ত্রৈধবিন্দু (Triple Point) বলে। এই ত্রৈধবিন্দুর তাপমাত্রা 273 K ধরা হয়। পানির ত্রৈধবিন্দুর তাপমাত্রার
ভাগ কে এক কেলভিন (1 K) বলে।
যে বস্তুর তাপমাত্রা বেশি সে তাপ হারায় আর যে বস্তুর তাপমাত্রা কম সে তাপ গ্রহণ করে। তাপমাত্রা পরিমাপের যন্ত্রের নাম থার্মোমিটার।
তাপমাত্রার একক: আন্তর্জাতিক পদ্ধতিতে তাপমাত্রার একক কেলভিন (K)।
কেলভিন: যে নির্দিষ্ট তাপমাত্রা ও চাপে পানি তিন অবস্থাতেই অর্থাৎ বরফ, পানি এবং জলীয় বাষ্পরূপে অবস্থান করে তাকে পানির ত্রৈধবিন্দু (Triple Point) বলে। এই ত্রৈধবিন্দুর তাপমাত্রা 273 K ধরা হয়। পানির ত্রৈধবিন্দুর তাপমাত্রার

তাপমাত্রা পরিমাপের ক্ষেত্রে পদার্থের বিশেষ
বিশেষ ধর্মকে কাজে লাগানো হয়। তাপমাত্রার তারতম্যের জন্য পদার্থের যে ধর্ম
নিয়মিতভাবে পরিবর্তিত হয় এবং এই পরিবর্তন লক্ষ করে সহজ ও সূক্ষ্মভাবে তাপমাত্রা
নিরূপন করা যায় সেই ধর্মকেই পদার্থের তাপমাত্রিক ধর্ম বলে। ঐ পদার্থকে তাপমাত্রিক
পদার্থ বলে। থার্মোমিটারের মধ্যে তাপমাত্রিক পদার্থ ব্যবহার করা হয়।
তাপমাত্রিক ধর্মগুলো হচ্ছে পদার্থের আয়তন, রোধ, চাপ ইত্যাদি। পারদ থার্মোমিটারের ক্ষেত্রে কাচের কৈশিক নলের ভিতরে রক্ষিত পারদকে তাপমাত্রিক পদার্থ এবং পারদ দৈর্ঘ্যকে তাপমাত্রিক ধর্ম বলা হয়। একইভাবে গ্যাস থার্মোমিটারের ক্ষেত্রে ধ্রুব আয়তনে পাত্রে রক্ষিত গ্যাসকে তাপমাত্রিক পদার্থ এবং গ্যাসের চাপকে তাপমাত্রিক ধর্ম বলা হয়।
তাপমাত্রিক ধর্মগুলো হচ্ছে পদার্থের আয়তন, রোধ, চাপ ইত্যাদি। পারদ থার্মোমিটারের ক্ষেত্রে কাচের কৈশিক নলের ভিতরে রক্ষিত পারদকে তাপমাত্রিক পদার্থ এবং পারদ দৈর্ঘ্যকে তাপমাত্রিক ধর্ম বলা হয়। একইভাবে গ্যাস থার্মোমিটারের ক্ষেত্রে ধ্রুব আয়তনে পাত্রে রক্ষিত গ্যাসকে তাপমাত্রিক পদার্থ এবং গ্যাসের চাপকে তাপমাত্রিক ধর্ম বলা হয়।
৬.৩: সেলসিয়াস, ফারেনহাইট
ও কেলভিন স্কেলের মধ্যে সম্পর্ক
Relation between Celsius, Farenheit and Kelvin scale[edit]
Relation between Celsius, Farenheit and Kelvin scale[edit]
কোনো বস্তুর তাপমাত্রা সঠিকভাবে নির্দেশ করার
জন্য তাপমাত্রার একটি স্কেল প্রয়োজন। তাপমাত্রার স্কেল তৈরির জন্য দুটি নির্দিষ্ট
তাপমাত্রাকে স্থির ধরে নেওয়া হয়।এই তাপমাত্রা দুটিকে স্থিরাঙ্ক বলে। স্থিরাঙ্ক
দুটি- নিম্নস্থিরাঙ্ক ও ঊর্ধ্বস্থিরাঙ্ক। প্রমাণ চাপে যে তাপমাত্রায় বিশুদ্ধবরফ
গলে পানি হয় অথবা বিশুদ্ধপানি জমে বরফ হয় তাকে নিম্নস্থিরাঙ্ক বলে। একে হিমাঙ্ক
বা বরফ বিন্দুও বলে। আবার প্রমাণ চাপে ফুটন্ত বিশুদ্ধ পানি যে তাপমাত্রায় জলীয়
বাষ্পে পরিণত হয় তাকে ঊর্ধ্বস্থিরাঙ্ক বলে। ঊর্ধ্বস্থিরাঙ্ককে স্ফুটনাংক বা বাষ্পবিন্দুও
বলে। স্থিরাঙ্কদুটির মধ্যবর্তী তাপমাত্রার ব্যবধানকে মৌলিক ব্যবধান বলে। মৌলিক
ব্যবধানকে নানাভাবে ভাগ করে তাপমাত্রার বিভিন্ন স্কেল তৈরি করা হয়েছে।তাপমাত্রার
প্রচলিত স্কেল তিনটি : সেলসিয়াস, ফারেনহাইট ও কেলভিন।
সেলসিয়াস, ফারেনহাইট ও কেলভিন স্কেলে
তাপমাত্রার একক যথাক্রমে °C, °F এবং °K। সেলসিয়াস স্কেলে নিম্ন স্থিরাঙ্ক
0°C,ফারেনহাইট স্কেলে 32°F এবং কেলভিন স্কেলে 273°K । উর্ধ্বস্থিরাঙ্ক সেলসিয়াস
স্কেলে 100°F, ফারেনহাইট স্কেলে 212°F এবং কেলভিন স্কেলে 373°K।
তাপমাত্রার বিভিন্ন স্কেলের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন:
নিম্নস্থিরাঙ্ক A এবং ঊর্ধ্বস্থিরাঙ্ক B চিহ্নিত একটি থার্মোমিটার নেওয়া হলো (চিত্র ৬.৩)। তারপর সেলসিয়াস, ফারেনহাইট ও কেলভিন স্কেলে দাগাঙ্কিত আরো তিনটি থার্মোমিটার পাশাপাশি রাখা হলো। AB থার্মোমিটারের P অবস্থানের পাঠ অপর তিনটি স্কেলে যথাক্রমে C, F এবং K ।
সুতরাং এই তিন স্কেলে PA দূরত্ব যথাক্রমে C- 0, F- 32 এবং K- 273। আবার
ধ্রুবক
হওয়ায় লেখা যায়,

বা,
বা,
.... .... .... .... ....
.... .... .... .... ....(6.1)
(৬.১) সমীকরণ(৬.১)হলো সেলসিয়াস,ফারেনহাইট ও কেলভিন স্কেলের মধ্যে সম্পর্ক নির্দেশ করে।
তবে সেলসিয়াস ও কেলভিন স্কেলের সহজ সম্পর্ক হলো- সেলসিয়াস স্কেলের পাঠের সাথে 273 যোগ করলে কেলভিন স্কেলে পাঠ পাওয়া যায়। যেমন 1°C তাপমাত্রা= (1+273) K= 274K তাপমাত্রা।
তবে তাপমাত্রার পার্থক্য 1°C হলে সেটা 1K এর সমান হবে।
গাণিতিক উদাহরণ ৬.১: সুস্থ মানুষের দেহের তাপমাত্রা 98.4°F। সেলসিয়াস স্কেলে এই তাপমাত্রা কত হবে?
তাপমাত্রার বিভিন্ন স্কেলের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন:
নিম্নস্থিরাঙ্ক A এবং ঊর্ধ্বস্থিরাঙ্ক B চিহ্নিত একটি থার্মোমিটার নেওয়া হলো (চিত্র ৬.৩)। তারপর সেলসিয়াস, ফারেনহাইট ও কেলভিন স্কেলে দাগাঙ্কিত আরো তিনটি থার্মোমিটার পাশাপাশি রাখা হলো। AB থার্মোমিটারের P অবস্থানের পাঠ অপর তিনটি স্কেলে যথাক্রমে C, F এবং K ।
সুতরাং এই তিন স্কেলে PA দূরত্ব যথাক্রমে C- 0, F- 32 এবং K- 273। আবার


বা,

বা,

(৬.১) সমীকরণ(৬.১)হলো সেলসিয়াস,ফারেনহাইট ও কেলভিন স্কেলের মধ্যে সম্পর্ক নির্দেশ করে।
তবে সেলসিয়াস ও কেলভিন স্কেলের সহজ সম্পর্ক হলো- সেলসিয়াস স্কেলের পাঠের সাথে 273 যোগ করলে কেলভিন স্কেলে পাঠ পাওয়া যায়। যেমন 1°C তাপমাত্রা= (1+273) K= 274K তাপমাত্রা।
তবে তাপমাত্রার পার্থক্য 1°C হলে সেটা 1K এর সমান হবে।
গাণিতিক উদাহরণ ৬.১: সুস্থ মানুষের দেহের তাপমাত্রা 98.4°F। সেলসিয়াস স্কেলে এই তাপমাত্রা কত হবে?
আমরা জানি,
![]() বা, ![]() বা, C= 36.89°C উত্তর:36.89°C |
দেওয়া আছে,
ফারেনহাইট স্কেলে তাপমাত্রা, F= 98.4°F সেলসিয়াস স্কেলে তাপমাত্রা, C= ? |
৬.৪ বস্তুর তাপমাত্রা
বৃদ্ধিও অভ্যন্তরীণ শক্তি
Raise of temperature and internal energy of a body[edit]
Raise of temperature and internal energy of a body[edit]
পদার্থের আণবিক গতিতত্ত্বের ভিত্তিতে আমরা
জানি যে, পদার্থের অণুগুলো সর্বদা গতিশীল। কঠিন পদার্থের অণুগুলো একস্থানে থেকে
এদিক-ওদিক স্পন্দিত হয়। তরল ও গ্যাসীয় পদার্থের অণুগুলো এলোমেলোভাবে ছুটাছুটি
করে। অণুগুলোর এই গতির জন্য গতিশক্তির সঞ্চার হয়। আবার কঠিন পদার্থের অণুগুলোর
মধ্যে আকর্ষণ-বিকর্ষণ বল আছে বলে বিভবশক্তি আছে। গ্যাসীয় পদার্থের অণুগুলোর মধ্যে
আকর্ষণ-বিকর্ষণ বল নেই বলে বিভবশক্তি নেই। পদার্থের অণুগুলোর গতিশক্তি ও
বিভবশক্তির সমষ্টিকে অভ্যন্তরীণ শক্তিবলে। স্পষ্টত অভ্যন্তরীণ শক্তির এক অংশ
গতিশক্তি অপর অংশ বিভবশক্তি। কোনো বস্তুতে তাপীয় শক্তি প্রদান করলে তার
অভ্যন্তরীণ শক্তি বাড়ে। তবে অভ্যন্তরীণ শক্তির গতিশক্তি অংশটুকু শুধুমাত্র
তাপমাত্রা বৃদ্ধি ঘটায়।
প্রায় সকল পদার্থই তাপ প্রয়োগে প্রসারিত
হয় আর তাপ অপসারণে সংকুচিত হয়। যখন কোনো বস্তু উত্তপ্ত হয়, তখন বস্তুটির
প্রত্যেক অণুর তাপশক্তি তথা গতিশক্তি বৃদ্ধিপায়। কঠিন পদার্থের বেলায় আন্তঃআণবিক
বলের বিপরীতে অণুগুলো আরো বর্ধিত শক্তিতে স্পন্দিত হতে থাকে ফলে সাম্যাবস্থা থেকে
অণুগুলোর সরণ বৃদ্ধি পায়। কিন্তু কোনো অণু এর সাম্যাবস্থা থেকে সরে যাবার সময়
টান অনুভব করে। অর্থাৎ, অণুটি যখন পার্শ্ববর্তী অণুর কাছাকাছি যেতে চায় তখন
বিকর্ষণ অনুভব করে। আবার আন্তঃআণবিক দূরত্ব যখন বৃদ্ধিপায় তখন আকর্ষণ অনুভব করে।
তাপমাত্রা বৃদ্ধিরকারণে কঠিন বস্তুর অণুগুলো স্পন্দিত হতে থাকে তবে তা সরল ছন্দিত
স্পন্দন নয়। এর কারণ, দুই অণুর মধ্যে দূরত্ব সাম্যাবস্থার তুলনায় যদি কমে যায়
তাহলে বিকর্ষণ বল দ্রুত বৃদ্ধি পায়। কিন্তু এদের মধ্যে দূরত্ব সাম্যাবস্থার
তুলনায় বৃদ্ধি পেলে আকর্ষণ বল তত দ্রুত বৃদ্ধিপায় না। ফলে তাপমাত্রা বৃদ্ধি
পাবার ফলে কঠিন বস্তুর মধ্যে অণুগুলো যখন কাঁপতে থাকে তখন একই শক্তি নিয়ে ভিতর
দিকে যতটা সরে আসতে পারে, বাইরের দিকে তার চেয়ে বেশি সরে যেতে পারে। এর ফলে
প্রত্যেক অণুর গড় সাম্যাবস্থান বাইরের দিকে সরে যায় এবং বস্তুটি প্রসারণ লাভ
করে।তরল পদার্থের বেলায় আন্তঃআণবিক বলের প্রভাব কম বলে তাপের কারণে এর প্রসারণ
বেশি হয়। বায়বীয় পদার্থের বেলায় তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে অণুগুলোর ছুটাছুটি
বৃদ্ধি পায়। তাপীয় প্রসারণ গ্যাসীয় পদার্থে সবচেয়ে বেশি, তরলে তার চেয়ে কম
এবং কঠিন পদার্থে সবচেয়ে কম।
তাপ
প্রয়োগ করলে কঠিন পদার্থের দৈর্ঘ্য, ক্ষেত্রফল এবং আয়তন বৃদ্ধিপায়।
কঠিন পদার্থের দৈর্ঘ্য প্রসারণ:
কঠিন বস্তুতে তাপ প্রয়োগ করলে নির্দিষ্ট দিকে দৈর্ঘ্য বরাবর যে প্রসারণ হয় তাকে বস্তুটির দৈর্ঘ্য প্রসারণ বলে।
ধরা যাক,
তাপমাত্রায়
কোনো দণ্ডের দৈর্ঘ্য
তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে
হলে
শেষ দৈর্ঘ্য =
,
দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি=
এবং তাপমাত্রা বৃদ্ধি=
দৈর্ঘ্য প্রসারণ সহগ a দ্বারা প্রকাশ করা হয় যার রাশিমালা

= দৈর্ঘ্য বৃদ্ধিআদি দৈর্ঘ্য ×তাপমাত্রার বৃদ্ধি
কঠিন পদার্থের দৈর্ঘ্য প্রসারণ:
কঠিন বস্তুতে তাপ প্রয়োগ করলে নির্দিষ্ট দিকে দৈর্ঘ্য বরাবর যে প্রসারণ হয় তাকে বস্তুটির দৈর্ঘ্য প্রসারণ বলে।
ধরা যাক,




দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি=

এবং তাপমাত্রা বৃদ্ধি=

দৈর্ঘ্য প্রসারণ সহগ a দ্বারা প্রকাশ করা হয় যার রাশিমালা

= দৈর্ঘ্য বৃদ্ধিআদি দৈর্ঘ্য ×তাপমাত্রার বৃদ্ধি
৬.২নং সমীকরণে যদি আদি দৈর্ঘ্য
এবং
তাপমাত্রা বৃদ্ধি
হয় তবে,
দৈর্ঘ্য
বৃদ্ধি
সুতরাং 1m দৈর্ঘ্যের কোনো কঠিন পদার্থের দণ্ডের তাপমাত্রা 1K বৃদ্ধির ফলে যতটুকু দৈর্ঘ্য বৃদ্ধিপায় তাকে ঐ দণ্ডের উপাদানের দৈর্ঘ্য প্রসারণ সহগ বলে। এর একক
। তামার দৈর্ঘ্য প্রসারণ
সহগ
বলতে বুঝায় যে 1m
দৈর্ঘ্যের তামার দণ্ডের তাপমাত্রা 1K বৃদ্ধি করলে এর দৈর্ঘ্য
বৃদ্ধি পায়।
গাণিতিক উদাহরণ ৬.২: 20°C তাপমাত্রায় একটি ইস্পাতের দণ্ডের দৈর্ঘ্য 100m। 50°C তাপমাত্রায় এর দৈর্ঘ্য 100.033 m হলে ইস্পাতের দৈর্ঘ্য প্রসারণ নির্ণয় কর।



সুতরাং 1m দৈর্ঘ্যের কোনো কঠিন পদার্থের দণ্ডের তাপমাত্রা 1K বৃদ্ধির ফলে যতটুকু দৈর্ঘ্য বৃদ্ধিপায় তাকে ঐ দণ্ডের উপাদানের দৈর্ঘ্য প্রসারণ সহগ বলে। এর একক



গাণিতিক উদাহরণ ৬.২: 20°C তাপমাত্রায় একটি ইস্পাতের দণ্ডের দৈর্ঘ্য 100m। 50°C তাপমাত্রায় এর দৈর্ঘ্য 100.033 m হলে ইস্পাতের দৈর্ঘ্য প্রসারণ নির্ণয় কর।
আমরা জানি, দৈর্ঘ্য প্রসারণ সহগ,
![]() ![]() ![]() |
দেওয়া আছে,
আদি দৈর্ঘ্য, ![]() শেষ দৈর্ঘ্য, ![]() আদি তাপমাত্রা, ![]() শেষ তাপমাত্রা, ![]() তাপমাত্রা বৃদ্ধি, ![]() দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি, ![]() দৈর্ঘ্য প্রসারণ সহগ,a= ? |
পর্যবেক্ষণ: রেল লাইনে যেখানে দুটি লোহার বার মিলিত হয় সেখানে ফাঁক থাকে কেন?
|
রৌদ্রের
তাপে ও চাকার ঘর্ষণে লোহা উত্তপ্ত হয়ে প্রসারিত হয়। এই প্রসারণের সুবিধার জন্য
ফাঁক রাখা হয়।ফাঁক না থাকলে প্রসারণের জন্য রেল লাইন বেঁকে যাবে।
ক্ষেত্র প্রসারণ ও ক্ষেত্র প্রসারণ সহগ:
একটি কঠিন বস্তুর তাপমাত্রা বৃদ্ধিকরলে এর ক্ষেত্রফল বৃদ্ধিপায়। একে ক্ষেত্র প্রসারণ বলে। ধরা যাক
তাপমাত্রায়
কোনো কঠিন পদার্থের পৃষ্ঠের আদি ক্ষেত্রফল=A1
তাপমাত্রা বৃদ্ধিকরে
করলে
শেষ ক্ষেত্রফল= A2
সুতরাং তাপমাত্রা বৃদ্ধি=
ক্ষেত্রফল বৃদ্ধি=
ক্ষেত্র প্রসারণ সহগকে
দ্বারা
প্রকাশ করা হয় যার রাশিমালা
... ... ... ... ... ...
... ... (6.3)
=ক্ষেত্রফল বৃদ্ধিআদি ক্ষেত্রফল× তাপমাত্রার বৃদ্ধি
ক্ষেত্র প্রসারণ ও ক্ষেত্র প্রসারণ সহগ:
একটি কঠিন বস্তুর তাপমাত্রা বৃদ্ধিকরলে এর ক্ষেত্রফল বৃদ্ধিপায়। একে ক্ষেত্র প্রসারণ বলে। ধরা যাক

তাপমাত্রা বৃদ্ধিকরে

সুতরাং তাপমাত্রা বৃদ্ধি=

ক্ষেত্রফল বৃদ্ধি=

ক্ষেত্র প্রসারণ সহগকে


=ক্ষেত্রফল বৃদ্ধিআদি ক্ষেত্রফল× তাপমাত্রার বৃদ্ধি
6.3 নং সমীকরণে যদি আদি ক্ষেত্রফল



সুতরাং 1m² ক্ষেত্রফলের কোনো কঠিন পদার্থের তাপমাত্রা 1K বৃদ্ধির ফলে যতটুকু ক্ষেত্রফল বৃদ্ধিপায় তাকে ঐ বস্তুর উপাদানের ক্ষেত্র প্রসারণ সহগ বলে। এর একক

তামার ক্ষেত্র প্রসারণ সহগ


আয়তন প্রসারণ ও আয়তন প্রসারণ সহগ
কোনো
কঠিন পদার্থের তাপমাত্রা বৃদ্ধিকরলে এর আয়তন বৃদ্ধিপায়। একে আয়তন প্রসারণ বলে।
ধরা যাক, কোনো কঠিন পদার্থের আদি আয়তন
এবং
আদি তাপমাত্রা
।
এর তাপমাত্রা বাড়িয়ে যখন
করা
হলো তখন আয়তন বৃদ্ধিপেয়ে
হলো।
সুতরাং আয়তন বৃদ্ধি=
। তাপমাত্রা বৃদ্ধি=
।
আয়তন প্রসারণ সহগকে
দ্বারা
প্রকাশ করা হয় যার রাশিমালা নিম্নরুপ,

= আয়তন বৃদ্ধিআদি আয়তন× তাপমাত্রার বৃদ্ধি
ধরা যাক, কোনো কঠিন পদার্থের আদি আয়তন


এর তাপমাত্রা বাড়িয়ে যখন




আয়তন প্রসারণ সহগকে


= আয়তন বৃদ্ধিআদি আয়তন× তাপমাত্রার বৃদ্ধি
6.4 নং সমীকরণে যদি আদি আয়তন



সুতরাং 1m³ আয়তনের কোনো কঠিন পদার্থের তাপমাত্রা 1K বৃদ্ধির ফলে যতটুকু আয়তন বৃদ্ধি পায় তাকে ঐ বস্তুর উপাদানের আয়তন প্রসারণ সহগ বলে।
তামার আয়তন প্রসারণ সহগ


এদের মধ্যে সম্পর্ক:


তরল পদার্থের নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্য বা ক্ষেত্রফল
নেই। তবে নির্দিষ্ট আয়তন আছে। তরলের তাপমাত্রা বৃদ্ধি করলে এর আয়তন বৃদ্ধি পায়।
সুতরাং তরলের প্রসারণ বলতে তরলের আয়তন প্রসারণকেই বোঝায়। তাপমাত্রা বৃদ্ধির সাথে
সাথে সকল তরল সমান হারে বৃদ্ধিপায় না। একই তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য সম-আয়তনের
বিভিন্ন তরল পদার্থের প্রসারণ বিভিন্ন হয়।
পরীক্ষা:
পরীক্ষা:
লম্বা নলযুক্ত সমআয়তনের ও সমআকারের কয়েকটি
কাচের বাল্ব নেওয়া হলো। এতে সমআয়তন পানি, অ্যালকোহলো, কেরোসিন,ইথার প্রভৃতি
কয়েকটি তরল নেওয়া হলো (চিত্র : ৬.৮) এবার একটি
অপেক্ষাকৃত বড় পাত্রে কক্ষ তাপমাত্রার পানি নিয়ে তার মধ্যে এই বাল্বগুলোকে
উলম্বভাবে স্থাপন করা হলো। সব কটি বাল্বের মধ্যে তরলের উপরিতল একই থাকবে। এখন
পাত্রে কিছু গরম পানি ঢালা হলো। কিছুক্ষণ পর যখন বাল্বগুলো উচ্চ তাপমাত্রা প্রাপ্ত
হবে তখন দেখা যাবে বাল্বের নলে তরলের উপরিতল একই উচ্চতায় নেই, বিভিন্ন নলে তরলের
উচ্চতা বিভিন্ন। এ থেকে বোঝা যায় যে নির্দিষ্ট তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে সমআয়তনের
বিভিন্ন তরলের আয়তন প্রসারণ বিভিন্ন হয়।
তরলকে সর্বদা কোনো পাত্রে রেখে উত্তপ্ত করতে
হয়। তাপ প্রয়োগ করলে তরল ও পাত্র উভয়েরই প্রসারণ ঘটে। এই কারণে তরলের যে
প্রসারণ আমরা লক্ষ্য করি তা তার প্রকৃত প্রসারণ নয় - আপাত প্রসারণ। সুতরাং তরলের
প্রসারণ দুই প্রকার:
ক) প্রকৃত প্রসারণ ও খ) আপাত প্রসারণ
প্রকৃত প্রসারণ: তরলকে কোনো পাত্রে না রেখে (যদি সম্ভব হয়) তাপ দিলে তার যে আয়তন প্রসারণ হতো তাকে তরলের প্রকৃত প্রসারণ বলে। তবে তা সম্ভব নয় ফলে পাত্রের প্রসারণ বিবেচনা করে প্রকৃতই তরলের যেটুকু প্রসারণ ঘটে তাই প্রকৃত প্রসারণ। একে
দ্বারা
প্রকাশ করা হয়।
আপাত প্রসারণ: কোনো পাত্রে তরল রেখে তাপ দিলে তরলের যে আয়তন প্রসারণ দেখতে পাওয়া যায়, অর্থাৎ পাত্রের প্রসারণ বিবেচনায় না এনে তরলের যে প্রসারণ পাওযা যায় তাকে তরলের আপাত প্রসারণ বলে। একে
দ্বারা
প্রকাশ করা হয়।
ক) প্রকৃত প্রসারণ ও খ) আপাত প্রসারণ
প্রকৃত প্রসারণ: তরলকে কোনো পাত্রে না রেখে (যদি সম্ভব হয়) তাপ দিলে তার যে আয়তন প্রসারণ হতো তাকে তরলের প্রকৃত প্রসারণ বলে। তবে তা সম্ভব নয় ফলে পাত্রের প্রসারণ বিবেচনা করে প্রকৃতই তরলের যেটুকু প্রসারণ ঘটে তাই প্রকৃত প্রসারণ। একে

আপাত প্রসারণ: কোনো পাত্রে তরল রেখে তাপ দিলে তরলের যে আয়তন প্রসারণ দেখতে পাওয়া যায়, অর্থাৎ পাত্রের প্রসারণ বিবেচনায় না এনে তরলের যে প্রসারণ পাওযা যায় তাকে তরলের আপাত প্রসারণ বলে। একে

প্রকৃত প্রসারণ ও আপাত প্রসারণের মধ্যে
সম্পর্ক:
একটা দাগ কাটা সরুনলবিশিষ্ট কাচের বাল্ব
নিয়ে তার A দাগ পর্যন্ত কোনো তরল দ্বারা পূর্ণ করা হলো। এখন তরল স্তম্ভের দিকে
লক্ষ রেখে বাল্বটিকে গরম করলে দেখা যাবে যে, তরলের উপরিতল A থেকে B দাগ পর্যন্ত
নেমে আসে। তারপর আবার B দাগ থেকে শুরু করে A দাগ অতিক্রম করে C দাগ পর্যন্ত ওঠে।
এর কারণ তাপ প্রয়োগে প্রথমে বাল্বটির আয়তন বৃদ্ধি পায়। যার জন্য তরল A থেকে B
তে নেমে যায়। পরে তরল যেই গরম হয় সেই তার আয়তন বৃদ্ধি শুরু হয় এবং B থেকে C
পর্যন্ত ওঠে। কঠিন পদার্থের চেয়ে তরলের প্রসারণ বেশি বিধায় এরূপ ঘটে। আপাত
দৃষ্টিতে মনে হবে তরল প্রথমে A দাগ পর্যন্ত ছিল এবং সবশেষে C দাগে উঠেছে। তাই CA
হলো আপাত প্রসারণ। CB হলো প্রকৃত প্রসারণ এবং AB হলো পাত্রের প্রসারণ।
চিত্র থেকে দেখা যায় যে,
CB = CA + AB
বা প্রকৃত প্রসারণ = আপাত প্রসারণ + পাত্রের প্রসারণ
.... ... .... .... ...
.... .... ... .... (6.5)
CB = CA + AB
বা প্রকৃত প্রসারণ = আপাত প্রসারণ + পাত্রের প্রসারণ

পদার্থ তিনটি অবস্থায় থাকতে পারে। যেমন-
কঠিন, তরল ও বায়বীয়। পানির তিনটি অবস্থা আমরা সকলেই জানি- বরফ, পানি ও
জলীয়বাষ্প। এ তিনটি অবস্থাকে যথাক্রমে কঠিন, তরল ও বায়বীয় বলা হয়। পানির এই
অবস্থাগুলো নির্ভর করে বায়ুচাপ ও তাপমাত্রার উপর।
কোনো কঠিন পদার্থকে তাপ প্রয়োগ করে তরলে পরিণত করা যায়, একে গলন বলে। প্রথমে তাপ দিলে বস্তুর তাপমাত্রা বাড়তে থাকে এবং এক পর্যায়ে তাপ প্রয়োগ করলেও বস্তুর তাপমাত্রা বাড়ে না। এ সময়ে যে তাপ বস্তু শোষণ করে তা দ্বারা কঠিন পদার্থটি তরলে পরিণত হয়। 0°C তাপমাত্রার নিচের বরফকে তাপ দিতে থাকলে তাপমাত্রা বৃদ্ধিপেয়ে ০য়ঈ-এ আসবে। এর পরতাপ দিলে তাপমাত্রা বৃদ্ধিপাবে না কিন্তু বরফ গলে 0°C তাপমাত্রার পানিতে পরিণত হতে থাকবে। কঠিন অবস্থা থেকে তরল অবস্থায় রূপান্তরের সময় পদার্থ যে তাপ শোষণ করে তা তার আন্তঃআণবিক বন্ধন ভাঙতে কাজ করে।
0°C তাপমাত্রার উক্ত পানিকে আর তাপ প্রয়োগ করলে তাপমাত্রা বাড়তে থাকে। আবার এক পর্যায়ে এসে পানি যখন জলীয় বাষ্পে পরিণত হতে থাকে তখন আর তাপমাত্রা বাড়ে না। এই সময় পানি তাপ শোষণ করে বায়বীয় অবস্থায় রূপান্তরিত হয়। এক্ষেত্রেও তরলের আন্তঃআণবিক বন্ধন ভাঙতে তাপের প্রভাব বিদ্যমান। বিপরীতক্রম বায়বীয় পদার্থ থেকে তাপ অপসারণ করে তাকে প্রথমে তরলে এবং তরল থেকে তাপ অপসারণ করে তাকে কঠিনে পরিণত করা যায়। সুতরাং পদার্থের অবস্থার পরিবর্তনে তাপের প্রভাব উল্লেখযোগ্য।
কোনো কঠিন পদার্থকে তাপ প্রয়োগ করে তরলে পরিণত করা যায়, একে গলন বলে। প্রথমে তাপ দিলে বস্তুর তাপমাত্রা বাড়তে থাকে এবং এক পর্যায়ে তাপ প্রয়োগ করলেও বস্তুর তাপমাত্রা বাড়ে না। এ সময়ে যে তাপ বস্তু শোষণ করে তা দ্বারা কঠিন পদার্থটি তরলে পরিণত হয়। 0°C তাপমাত্রার নিচের বরফকে তাপ দিতে থাকলে তাপমাত্রা বৃদ্ধিপেয়ে ০য়ঈ-এ আসবে। এর পরতাপ দিলে তাপমাত্রা বৃদ্ধিপাবে না কিন্তু বরফ গলে 0°C তাপমাত্রার পানিতে পরিণত হতে থাকবে। কঠিন অবস্থা থেকে তরল অবস্থায় রূপান্তরের সময় পদার্থ যে তাপ শোষণ করে তা তার আন্তঃআণবিক বন্ধন ভাঙতে কাজ করে।
0°C তাপমাত্রার উক্ত পানিকে আর তাপ প্রয়োগ করলে তাপমাত্রা বাড়তে থাকে। আবার এক পর্যায়ে এসে পানি যখন জলীয় বাষ্পে পরিণত হতে থাকে তখন আর তাপমাত্রা বাড়ে না। এই সময় পানি তাপ শোষণ করে বায়বীয় অবস্থায় রূপান্তরিত হয়। এক্ষেত্রেও তরলের আন্তঃআণবিক বন্ধন ভাঙতে তাপের প্রভাব বিদ্যমান। বিপরীতক্রম বায়বীয় পদার্থ থেকে তাপ অপসারণ করে তাকে প্রথমে তরলে এবং তরল থেকে তাপ অপসারণ করে তাকে কঠিনে পরিণত করা যায়। সুতরাং পদার্থের অবস্থার পরিবর্তনে তাপের প্রভাব উল্লেখযোগ্য।
গলন
তাপ প্রয়োগে কঠিন পদার্থকে তরলে পরিণত করাকে গলন বলে। যে নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় কঠিন পদার্থ গলতে শুরু করে সেই তাপমাত্রাকে গলনাঙ্ক বলে। সমস্ত পদার্থ না গলা পর্যন্তএই তাপমাত্রা স্থির থাকে।
বাষ্পীভবন
পদার্থের তরল অবস্থা থেকে বাষ্পীয় অবস্থায় পরিণত হওয়ার ঘটনাকে বাষ্পীভবন বলে। এই বাষ্পীভবন দুটি পদ্ধতিতে হতে পারে-
(i) বাষ্পায়ন (Evaporation)ও
(ii) স্ফুটন(Boiling)
বাষ্পায়ন:
যে কোনো তাপমাত্রায় তরলের শুধুমাত্র উপরিতল থেকে ধীরে ধীরে বাষ্পে পরিণত হওয়ার প্রক্রিয়াকে বাষ্পায়ন বলে।
তাপ প্রয়োগে কঠিন পদার্থকে তরলে পরিণত করাকে গলন বলে। যে নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় কঠিন পদার্থ গলতে শুরু করে সেই তাপমাত্রাকে গলনাঙ্ক বলে। সমস্ত পদার্থ না গলা পর্যন্তএই তাপমাত্রা স্থির থাকে।
বাষ্পীভবন
পদার্থের তরল অবস্থা থেকে বাষ্পীয় অবস্থায় পরিণত হওয়ার ঘটনাকে বাষ্পীভবন বলে। এই বাষ্পীভবন দুটি পদ্ধতিতে হতে পারে-
(i) বাষ্পায়ন (Evaporation)ও
(ii) স্ফুটন(Boiling)
বাষ্পায়ন:
যে কোনো তাপমাত্রায় তরলের শুধুমাত্র উপরিতল থেকে ধীরে ধীরে বাষ্পে পরিণত হওয়ার প্রক্রিয়াকে বাষ্পায়ন বলে।
কর্মকাণ্ড:
একটি বাটিতে কিছুটা পানি নিয়ে তোমার ঘরের এক কোণে রেখে দাও। দুই একদিন পরে দেখ পানির কী হয়েছে? দেখা যাবে বাটির পানি কমে গেছে এই পানি কমার কারণ কী?
|
ঘরের তাপমাত্রাতেও পানি জলীয়বাষ্পে পরিণত
হয়েছে। তাই পানি কমে গেছে। এটাই বাষ্পায়ন।
স্ফুটন: তাপ প্রয়োগে একট নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় তরলের সকল স্থান থেকে দ্রুত বাষ্পে পরিণত হওয়ার ঘটনাকে স্ফুটন বলে। যে নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় কোনো তরলের স্ফুটন হয়, তাকে ঐ তরলের স্ফুটনাঙ্ক বলে। স্ফুটনাঙ্কের মান চাপের উপর নির্ভর করে।
স্ফুটন: তাপ প্রয়োগে একট নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় তরলের সকল স্থান থেকে দ্রুত বাষ্পে পরিণত হওয়ার ঘটনাকে স্ফুটন বলে। যে নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় কোনো তরলের স্ফুটন হয়, তাকে ঐ তরলের স্ফুটনাঙ্ক বলে। স্ফুটনাঙ্কের মান চাপের উপর নির্ভর করে।
পরীক্ষা:
যদি কিছু পরিমাণ পানি পাত্রে নিয়ে গরম করা হয় তবে দেখা যাবে তাপমাত্রা বৃদ্ধিপেয়ে পানি একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় ফুটতে শুরু করেছে এবং জলীয় বাষ্পে রূপান্তরিত হচ্ছে এটাই স্ফুটন। সুতরাং বোঝা গেল তরল যে কোনো তাপমাত্রায় বায়বীয় অবস্থায় যেতে পারে আবার স্ফুটনাঙ্কের তাপমাত্রায়ও বায়বীয় অবস্থায় যেতে পারে।
|
ঘনীভবন:
উষ্ণতার হ্রাস ঘটিয়ে কোনো পদার্থের বায়রীয় অবস্থা থেকে তরল অবস্থায় রূপান্ততরিত হওয়ার প্রক্রিয়াকে ঘনীভবন বলে।
উষ্ণতার হ্রাস ঘটিয়ে কোনো পদার্থের বায়রীয় অবস্থা থেকে তরল অবস্থায় রূপান্ততরিত হওয়ার প্রক্রিয়াকে ঘনীভবন বলে।
নিজে করে দেখো: দুই টুকরো বরফকে এক সঙ্গে নিয়ে কিছুক্ষণ জোরে চেপে ধরে ছেড়ে দাও। কী দেখতে
পাচ্ছ? টুকরা দুইটি জোড়া লেগে গিয়েছে। কেন?
|
বরফ টুকরা দুটোর স্পর্শতলে চাপ পড়ায় সেখানে
গলনাঙ্ক কমে যায় অর্থাৎ গলনাঙ্ক 0°C এর চেয়ে কম হয়। কিন্তু স্পর্শতলের উষ্ণতা
0°C থাকে। তাই স্পর্শতলের বরফ গলে যায়। গলার জন্য প্রয়োজনীয় তাপ বরফ থেকে
সংগৃহীত হবে। চাপ অপসারণ করলে গলনাঙ্ক পুনরায় 0°C- হয়।
তাই স্পর্শতলের বরফ গলা পানি জমে বরফে পরিণত হয়। এই কারণে চাপ প্রয়োগ করলে দুই টুকরা বরফ এক টুকরায় পরিণত হয়। চাপ দিয়ে কঠিন বস্তুকে তরলে পরিণত করে ও চাপ হ্রাস করে আবার কঠিন অবস্থায় আনাকে পুনঃশিলীভবন বলে।
পদার্থের উপর চাপের হ্রাস-বৃদ্ধির জন্য গলনাঙ্ক পরিবর্তিত হয়। চাপের জন্য গলনাঙ্ক পরিবর্তন দুই ভাবে হতে পারে।
তাই স্পর্শতলের বরফ গলা পানি জমে বরফে পরিণত হয়। এই কারণে চাপ প্রয়োগ করলে দুই টুকরা বরফ এক টুকরায় পরিণত হয়। চাপ দিয়ে কঠিন বস্তুকে তরলে পরিণত করে ও চাপ হ্রাস করে আবার কঠিন অবস্থায় আনাকে পুনঃশিলীভবন বলে।
পদার্থের উপর চাপের হ্রাস-বৃদ্ধির জন্য গলনাঙ্ক পরিবর্তিত হয়। চাপের জন্য গলনাঙ্ক পরিবর্তন দুই ভাবে হতে পারে।
·
কঠিন থেকে তরলে রূপান্তরের সময় যেসব
পদার্থের আয়তন হ্রাস পায় (যেমন বরফ), চাপ বাড়লে তাদের
গলনাঙ্ক কমে যায় অর্থাৎ কম তাপমাত্রায় গলে।
·
কঠিন থেকে তরলে রূপান্তরের সময় যেসব
পদার্থের আয়তন বেড়ে যায় (যেমন মোম), চাপ বাড়লে তাদের
গলনাঙ্ক বেড়ে যায় অর্থাৎ বেশি তাপমাত্রায়
গলে।
৬.১২ গলনের সুপ্ততাপ ও
বাষ্পীভবনের সুপ্ততাপ
Latent heat of fusion and Latent heat of vaporisation[edit]
Latent heat of fusion and Latent heat of vaporisation[edit]
গলনের সুপ্ততাপ: আমরা
জানি, তাপ প্রয়োগের ফলে কঠিন পদার্থের তাপমাত্রা যখন গলনাঙ্কে পৌছায় তখন
সম্পূর্ণ পদার্থ তরলে রূপান্তরিত হওয়া পর্যন্ত তাপমাত্রার আর পরিবর্তন হয় না।
এখানে যে পরিমাণ তাপ কঠিন পদার্থকে তরল অবস্থায় রূপাšতর করল তাই গলনের সুপ্ততাপ।
এই তাপ বস্তুর তাপমাত্রার পরিবর্তন করে না কিন্তু আ ন্তঃআণবিক বন্ধন শিথিল করতে ব্যয় হয়।
বাষ্পীভবনের সুপ্ততাপ: তরল পদার্থকে তাপ প্রয়োগ করতে থাকলে যখন তাপমাত্রা স্ফুটনাঙ্কে চলে আসে তখন যতই তাপ প্রয়োগ করা হোক না কেন সম্পূর্ণ তরল বাষ্পে রূপান্তরিত হওয়া পর্যন্ত তাপমাত্রা স্থির থাকে। এখানে যে পরিমাণ তাপ তরল পদার্থকে বাষ্পীয় অবস্থায় রূপান্তর করল তাই বাষ্পীভবনের সুপ্ততাপ।
বাষ্পায়নে শীতলতার উদ্ভব: গরমের দিনে নতুন মাটির কলসিতে পানি রাখলে ঐ পানি ঠান্ডা হয়। মাটির কলসির গায়ে অসংখ্য ছিদ্র থাকে ঐ ছিদ্র দিয়ে সর্বদা পানি চুইয়ে বাহিরে আসে ও বাষ্পে পরিণত হয়। এজন্য প্রয়োজনীয় সুপ্ততাপ কলসির পানি সরবরাহ করে এবং ঠান্ডা হয়।
কাচ বা পিতলের পাত্রে পানি রাখলে তা ঠান্ডা হয় না। কারণ, ঐ পাত্রের গায়ে ছিদ্র থাকে না এবং বাষ্পায়নের কোনো সুযোগ সৃষ্টি হয় না।
এবার বল তোমার দেহ থেকে যখন ঘাম বের হয়; তখন পাখার বাতাসে ঠান্ডা অনুভূত হয় কেন?
এই তাপ বস্তুর তাপমাত্রার পরিবর্তন করে না কিন্তু আ ন্তঃআণবিক বন্ধন শিথিল করতে ব্যয় হয়।
বাষ্পীভবনের সুপ্ততাপ: তরল পদার্থকে তাপ প্রয়োগ করতে থাকলে যখন তাপমাত্রা স্ফুটনাঙ্কে চলে আসে তখন যতই তাপ প্রয়োগ করা হোক না কেন সম্পূর্ণ তরল বাষ্পে রূপান্তরিত হওয়া পর্যন্ত তাপমাত্রা স্থির থাকে। এখানে যে পরিমাণ তাপ তরল পদার্থকে বাষ্পীয় অবস্থায় রূপান্তর করল তাই বাষ্পীভবনের সুপ্ততাপ।
বাষ্পায়নে শীতলতার উদ্ভব: গরমের দিনে নতুন মাটির কলসিতে পানি রাখলে ঐ পানি ঠান্ডা হয়। মাটির কলসির গায়ে অসংখ্য ছিদ্র থাকে ঐ ছিদ্র দিয়ে সর্বদা পানি চুইয়ে বাহিরে আসে ও বাষ্পে পরিণত হয়। এজন্য প্রয়োজনীয় সুপ্ততাপ কলসির পানি সরবরাহ করে এবং ঠান্ডা হয়।
কাচ বা পিতলের পাত্রে পানি রাখলে তা ঠান্ডা হয় না। কারণ, ঐ পাত্রের গায়ে ছিদ্র থাকে না এবং বাষ্পায়নের কোনো সুযোগ সৃষ্টি হয় না।
এবার বল তোমার দেহ থেকে যখন ঘাম বের হয়; তখন পাখার বাতাসে ঠান্ডা অনুভূত হয় কেন?
নিম্নলিখিত বিষয়ের উপর বাষ্পায়ন নির্ভর
করে:
বায়ু প্রবাহ: তরলের উপর বায়ু প্রবাহ বৃদ্ধিপেলে বাষ্পায়ন দ্রুত হয়।
তরলের উপরিতলের
ক্ষেত্রফল: তরলের উপরিতলের ক্ষেত্রফল যত বেশি হয়, বাষ্পায়ন তত দ্রুত হয়।
তরলের প্রকৃতি: বিভিন্ন তরলের বাষ্পায়নের হার বিভিন্ন। তরলের স্ফুটনাঙ্ক কম হলে বাষ্পায়নের হার বেশি হয়। উদ্বায়ী তরলের বাষ্পায়নের হার সর্বাধিক।
তরলের উপর চাপ: তরলের উপর বায়ুমণ্ডলের চাপ বাড়লে বাষ্পায়নের হার কমে যায়। চাপ কমলে বাষ্পায়নের হার বাড়ে। শূন্যস্থানে বাষ্পায়নের হার সর্বাধিক।
তরল ও তরল সংলগ্ন
বায়ুর উষ্ণতা: তরল ও তরল সংলগ্ন বায়ুর উষ্ণতা বাড়লে বাষ্পায়ন দ্রুত হয়।
বায়ুর শুষ্কতা: তরল পদার্থের উপরিতলের বাতাস যত শুষ্ক হবে, অর্থাৎ বায়ুতে যত কম পরিমাণ জলীয় বাষ্প থাকবে বাষ্পায়ন তত দ্রুত হবে। শীতকালে বায়ু শুষ্ক থাকে বলে ভিজা কাপড় তাড়াতাড়ি শুকায়।
বায়ু প্রবাহ: তরলের উপর বায়ু প্রবাহ বৃদ্ধিপেলে বাষ্পায়ন দ্রুত হয়।
তরলের উপরিতলের
ক্ষেত্রফল: তরলের উপরিতলের ক্ষেত্রফল যত বেশি হয়, বাষ্পায়ন তত দ্রুত হয়।
তরলের প্রকৃতি: বিভিন্ন তরলের বাষ্পায়নের হার বিভিন্ন। তরলের স্ফুটনাঙ্ক কম হলে বাষ্পায়নের হার বেশি হয়। উদ্বায়ী তরলের বাষ্পায়নের হার সর্বাধিক।
তরলের উপর চাপ: তরলের উপর বায়ুমণ্ডলের চাপ বাড়লে বাষ্পায়নের হার কমে যায়। চাপ কমলে বাষ্পায়নের হার বাড়ে। শূন্যস্থানে বাষ্পায়নের হার সর্বাধিক।
তরল ও তরল সংলগ্ন
বায়ুর উষ্ণতা: তরল ও তরল সংলগ্ন বায়ুর উষ্ণতা বাড়লে বাষ্পায়ন দ্রুত হয়।
বায়ুর শুষ্কতা: তরল পদার্থের উপরিতলের বাতাস যত শুষ্ক হবে, অর্থাৎ বায়ুতে যত কম পরিমাণ জলীয় বাষ্প থাকবে বাষ্পায়ন তত দ্রুত হবে। শীতকালে বায়ু শুষ্ক থাকে বলে ভিজা কাপড় তাড়াতাড়ি শুকায়।
কোনো বস্তুর তাপমাত্রা 1K বাড়াতে যে পরিমাণ
তাপের প্রয়োজন তাকে ঐ বস্তুর তাপধারণ ক্ষমতা বলে। তাপধারণ ক্ষমতা বস্তুর উপাদান
এবং ভরের উপর নির্ভরশীল। এর একক
। কোনো বস্তুর
তাপধারণক্ষমতা
বলতে বুঝায় যে ঐ বস্তুর
তাপমাত্রা 1K বাড়াতে 10J তাপের প্রয়োজন।
কোনো বস্তুর তাপমাত্রা
বাড়াতে ধরা যাক Q পরিমাণ
তাপ লাগে। সুতরাং 1K তাপমাত্রা বাড়াতে তাপ লাগে
=
।
সুতরাং তাপধারণ ক্ষমতা, C=
.... .... .... .... ....
.... .... .... .... (6.6)


কোনো বস্তুর তাপমাত্রা

=

সুতরাং তাপধারণ ক্ষমতা, C=

1kg ভরের বস্তুর তাপমাত্রা 1K বাড়াতে যে
পরিমাণ তাপের প্রয়োজন হয় তাকে ঐ বস্তুর উপাদানের আপেক্ষিক তাপ বলে। আপেক্ষিক
তাপকে s দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
গাণিতিকভাবে, আপেক্ষিক তাপ S হলে,
.... .... .... .... ....
(6.7)
এখানে, C= তাপধারণ ক্ষমতা,
Q= শেষিত তাপ
= তাপমাত্রা পরিবর্তন
m= বস্তুর ভর
একক: আপেক্ষিক তাপের একক
সীসার আপেক্ষিক তাপ
বলতে বুঝায় 1kg সীসার তাপমাত্রা 1K বাড়াতে
130J তাপের প্রয়োজন।
গাণিতিকভাবে, আপেক্ষিক তাপ S হলে,

এখানে, C= তাপধারণ ক্ষমতা,
Q= শেষিত তাপ

m= বস্তুর ভর
একক: আপেক্ষিক তাপের একক

সীসার আপেক্ষিক তাপ

পদার্থ
|
আপেক্ষিক তাপ
![]() |
পানি
বরফ জলীয় বাষ্প সীসা তামা রূপা |
৪২০০
২১০০ ২০০০ ১৩০ ৪০০ ২৩০ |
৬.১৬ আপেক্ষিক তাপ ও
তাপধারণ ক্ষমতার সম্পর্ক
Relation between specific heat and thermal capacity[edit]
Relation between specific heat and thermal capacity[edit]
আমরা
জানি, কোনো বস্তুর তাপমাত্রা 1K বাড়াতে যে তাপের প্রয়োজন হয় তাকে ঐ বস্তুর তাপ
ধারণ ক্ষমতা বলে। আবার যদি বস্তুর উপাদানের আপেক্ষিক তাপ S হয়, তবে একক ভরের
বস্তুর তাপমাত্রা 1K বাড়াতে S জুল তাপের প্রয়োজন হয়।
অতএব,
1kg বস্তুর তাপমাত্রা 1K বাড়াতে তাপের প্রয়োজন= S জুল
mkg ” ” 1K ” ” ” = mS জুল
এটাই mkg ভরের বস্তুর তাপ ধারণ ক্ষমতা।
অতএব, তাপধারণ ক্ষমতা C = mS জুল .... .... .... .... .... (6.8)
বা, তাপধারণ ক্ষমতা= ভর × আপেক্ষিক তাপ
সুতরাং, আপেক্ষিক তাপ= তাপধারণ ক্ষমতাভর
অতএব,
1kg বস্তুর তাপমাত্রা 1K বাড়াতে তাপের প্রয়োজন= S জুল
mkg ” ” 1K ” ” ” = mS জুল
এটাই mkg ভরের বস্তুর তাপ ধারণ ক্ষমতা।
অতএব, তাপধারণ ক্ষমতা C = mS জুল .... .... .... .... .... (6.8)
বা, তাপধারণ ক্ষমতা= ভর × আপেক্ষিক তাপ
সুতরাং, আপেক্ষিক তাপ= তাপধারণ ক্ষমতাভর
এটাই, আপেক্ষিক তাপ ও তাপধারণ ক্ষমতার
সম্পর্ক।
ভিন্ন তাপমাত্রার দুটি বস্তুকে তাপীয়
সংস্পর্শে আনা হলে তাদের মধ্যে তাপের আদান-প্রদান হয়। যে বস্তুর তাপমাত্রা বেশি
সে তাপ বর্জন করবে আর যে বস্তুর তাপমাত্রা কম সে তাপ গ্রহণ করবে। তাপের এই গ্রহণ ও
বর্জন চলতে থাকবে যতক্ষণ না উভয়ের তাপমাত্রা সমান হয়।
যদি গ্রহণ ও বর্জনের সময় কোনো তাপ নষ্ট না হয়, তবে বেশি তাপমাত্রার বস্তু যে পরিমাণ তাপ বর্জন করবে কম তাপমাত্রার বস্তু সেই পরিমাণ তাপ গ্রহণ করবে।
অর্থাৎ মোট বর্জিত তাপ = মোট গৃহিত তাপ .... .... .... .... .... (6.9)
এটাই ক্যালরিমিতির মূলনীতি।
অনুসন্ধান নং ৬.১
বরফের গলনাঙ্ক নির্ণয়।
উদ্দেশ্য: বরফের গলন পর্যবেক্ষণ ও গলনাঙ্কের সাথে তাপমাত্রার সম্পর্ক নির্ণয় ও লেখচিত্র অঙ্কন।
যন্ত্রপাতি: সেলসিয়াস থার্মোমিটার, বরফ, স্ট্যান্ড, বার্ণার, বিকার, স্টপওয়াচ।
কার্যপদ্ধতি:
১. কিছু বরফ নিয়ে চূর্ণ করে একটি বিকারে রাখ।
২. থার্মোমিটারকে সতর্কতার সাথে বরফ চূর্ণের মধ্যে ডুবাও যাতে বাল্বটি বরফের মধ্যে থাকে কিন্তু বিকারের গায়ে না লাগে।
৩. তাপ প্রয়োগ করে ধীরে ধীরে তাপমাত্রা রেকর্ড করতে হবে।
৪. প্রতি মিনিটে তাপমাত্রা রেকর্ড কর যতক্ষণ পর্যন্ত সব বরফ না গলে যায়।
৫. উপরের নিয়মে বরফ সম্পূর্ণ গলে পানি হবার পরও তাপ দিতে থাকো যতক্ষণ না তাপমাত্রা ২০°C-২৫°C হয়। প্রতি মিনিটে তাপমাত্রা লিপিবদ্ধকর।
৬. প্রাপ্ত তথ্যের আলোকে তাপমাত্রা বনাম সময় লেখচিত্র অঙ্কন কর।
৭. লেখচিত্র বা গ্রাফ থেকে বরফের গলনাঙ্ক বের কর।
৮. লেখচিত্রের প্রকৃতি আলোচনা কর।
যদি গ্রহণ ও বর্জনের সময় কোনো তাপ নষ্ট না হয়, তবে বেশি তাপমাত্রার বস্তু যে পরিমাণ তাপ বর্জন করবে কম তাপমাত্রার বস্তু সেই পরিমাণ তাপ গ্রহণ করবে।
অর্থাৎ মোট বর্জিত তাপ = মোট গৃহিত তাপ .... .... .... .... .... (6.9)
এটাই ক্যালরিমিতির মূলনীতি।
অনুসন্ধান নং ৬.১
বরফের গলনাঙ্ক নির্ণয়।
উদ্দেশ্য: বরফের গলন পর্যবেক্ষণ ও গলনাঙ্কের সাথে তাপমাত্রার সম্পর্ক নির্ণয় ও লেখচিত্র অঙ্কন।
যন্ত্রপাতি: সেলসিয়াস থার্মোমিটার, বরফ, স্ট্যান্ড, বার্ণার, বিকার, স্টপওয়াচ।
কার্যপদ্ধতি:
১. কিছু বরফ নিয়ে চূর্ণ করে একটি বিকারে রাখ।
২. থার্মোমিটারকে সতর্কতার সাথে বরফ চূর্ণের মধ্যে ডুবাও যাতে বাল্বটি বরফের মধ্যে থাকে কিন্তু বিকারের গায়ে না লাগে।
৩. তাপ প্রয়োগ করে ধীরে ধীরে তাপমাত্রা রেকর্ড করতে হবে।
৪. প্রতি মিনিটে তাপমাত্রা রেকর্ড কর যতক্ষণ পর্যন্ত সব বরফ না গলে যায়।
৫. উপরের নিয়মে বরফ সম্পূর্ণ গলে পানি হবার পরও তাপ দিতে থাকো যতক্ষণ না তাপমাত্রা ২০°C-২৫°C হয়। প্রতি মিনিটে তাপমাত্রা লিপিবদ্ধকর।
৬. প্রাপ্ত তথ্যের আলোকে তাপমাত্রা বনাম সময় লেখচিত্র অঙ্কন কর।
৭. লেখচিত্র বা গ্রাফ থেকে বরফের গলনাঙ্ক বের কর।
৮. লেখচিত্রের প্রকৃতি আলোচনা কর।
অনুসন্ধান নং ৬.২
পরীক্ষার নাম: পানির স্ফুটনাঙ্ক নির্ণয়।
উদ্দেশ্য: পানির স্ফুটন পর্যবেক্ষণ ও স্ফুটনাঙ্কের সাথে তাপমাত্রার সম্পর্ক নির্ণয় করা।
যন্ত্রপাতি: থার্মোমিটার, বার্নার, বিকার, স্টপ ওয়াচ।
কার্যপদ্ধতি:
১. একটি বিকারে কক্ষ তাপমাত্রার পানি নাও এবং বিকারের পানিতে থার্মোমিটারটি এমনভাবে স্থাপন কর যেন বাল্বটি বিকারের গায়ে না লাগে।
২. বার্নারের সাহায্যে পানিতে তাপ দাও এবং ১ মিনিট পর পর পানির তাপমাত্রা বৃদ্ধি রেকর্ড কর।
৩. লক্ষ কর পানির তাপমাত্রা 100°C হওয়ার পর আর যতই তাপ বৃদ্ধি করছ তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে না।
৪. প্রাপ্ত তথ্যের আলোকে তাপমাত্রা-সময় লেখচিত্র অঙ্কন কর।
৫. লেখচিত্র থেকে বরফের গলনাঙ্ক নির্ণয় কর।
৬. লেখচিত্রের প্রকৃতি আলোচনা কর।
তাপমাত্রা বনাম সময় লেখচিত্রে (Graph)অঙ্কন।
পরীক্ষার নাম: পানির স্ফুটনাঙ্ক নির্ণয়।
উদ্দেশ্য: পানির স্ফুটন পর্যবেক্ষণ ও স্ফুটনাঙ্কের সাথে তাপমাত্রার সম্পর্ক নির্ণয় করা।
যন্ত্রপাতি: থার্মোমিটার, বার্নার, বিকার, স্টপ ওয়াচ।
কার্যপদ্ধতি:
১. একটি বিকারে কক্ষ তাপমাত্রার পানি নাও এবং বিকারের পানিতে থার্মোমিটারটি এমনভাবে স্থাপন কর যেন বাল্বটি বিকারের গায়ে না লাগে।
২. বার্নারের সাহায্যে পানিতে তাপ দাও এবং ১ মিনিট পর পর পানির তাপমাত্রা বৃদ্ধি রেকর্ড কর।
৩. লক্ষ কর পানির তাপমাত্রা 100°C হওয়ার পর আর যতই তাপ বৃদ্ধি করছ তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে না।
৪. প্রাপ্ত তথ্যের আলোকে তাপমাত্রা-সময় লেখচিত্র অঙ্কন কর।
৫. লেখচিত্র থেকে বরফের গলনাঙ্ক নির্ণয় কর।
৬. লেখচিত্রের প্রকৃতি আলোচনা কর।
তাপমাত্রা বনাম সময় লেখচিত্রে (Graph)অঙ্কন।
No comments:
Post a Comment