Wednesday, February 1, 2017
জীবন বাঁচাতে পদার্থবিজ্ঞান
পদার্থবিজ্ঞানের সাথে জীববিজ্ঞানের সম্পর্ক স্থাপন করে একটি নতুন বিষয়ের বিকাশ ঘটেছে তার নাম জীবপদার্থবিজ্ঞান। বেঁচে থাকার জন্য আমাদের দরকার সুস্থ, সবল ও নিরোগ দেহ। সুস্থ থাকার জন্য প্রয়োজন সঠিক চিকিৎসা। চিকিৎসা বিজ্ঞানে রোগ নির্ণয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পদার্থবিজ্ঞানের বিভিন্ন তত্ত্ব ও নীতির উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে নানা ধরনের চিকিৎসা যন্ত্রপাতি। এসকল যন্ত্রপাতি পদার্থবিজ্ঞানের কোনো নীতি বা তত্ত্বকে কাজে লাগিয়ে কাজ করে। এমন কিছু যন্ত্রপাতি সম্পর্কে এ অধ্যায়ে আলোচনা করা হবে।]
১৪.১ জীবপদার্থবিজ্ঞান এর ভিত্তি
Background of bio-physicsEdit
জীবপদার্থবিজ্ঞান হলো এমন এক বিজ্ঞান যা বিজ্ঞানের অনেকগুলো শাখার উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। জীবপদার্থবিজ্ঞানে জীববিজ্ঞানের কোনো ব্যবস্থাকে অধ্যয়নের জন্য ভৌতবিজ্ঞানের তত্ত্ব ও পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। জীববিজ্ঞান হলো জীবজগৎ অধ্যয়নের বিজ্ঞান। কীভাবে উদ্ভিদ ও প্রাণী খাদ্য আহরণ করে, যোগাযোগ রক্ষা করে, পরিবেশ সম্পর্কে উপলব্ধি লাভ করে এবং বংশবৃদ্ধি করে এ বিষয়গুলো জীববিজ্ঞানে বর্ণনা করা হয়। অন্যদিকে প্রকৃতি যে সব গাণিতিক নিয়ম মেনে চলে সেগুলো হলো পদার্থবিজ্ঞানের আলোচ্য বিষয়। দীর্ঘদিন একটি ধারণা বিজ্ঞানীরা পোষণ করে এসেছেন যে জীবজগতের নিয়ম ও ভৌতজগতের নিয়ম আলাদা। কিন্তু ভৌতবিজ্ঞান ও জীববিজ্ঞানের অগ্রগতির ভিতর দিয়ে এই দুই আপাত ভিন্ন শৃঙ্খলার মধ্যে গভীর মিল পাওয়া গেছে। প্রথমে পদার্থবিজ্ঞান ও জীববিজ্ঞান দুটি ভিন্ন বিষয় হিসেবে বিকাশ লাভ করেছে। বিজ্ঞানের অগ্রগতির মধ্য দিয়ে এই দুই বিষয়ের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক ও সমন্বয় অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। আগে মনে করা হতো প্রাণিজগত ভিন্ন এক নিয়ম চলে এবং জড় পদার্থের ক্ষেত্রে শুধু ভৌতবিজ্ঞানের নিয়মগুলো প্রযোজ্য। কিন্তু আমরা এখন জানি প্রাণিদেহকে অনেক দিক থেকে যন্ত্রের সঙ্গে তুলনা করা যায় এবং প্রাণিদেহের অনেক আচরণকে ভৌত নিয়ম দ্বারা ব্যাখ্যা করা সম্ভব। বস্তুত পদার্থবিজ্ঞানের নিয়মগুলো সার্বজনীন। ফলে শুধু জড়জগত নয়, প্রাণিজগতকেও পদার্থবিজ্ঞানের নিয়মে অনেক ক্ষেত্রে ব্যাখ্যা করা সম্ভব। এটিই জীবপদার্থবিজ্ঞনের ভিত্তি।
জীবপদার্থবিজ্ঞানের চ্যালেঞ্জ হলো কীভাবে জীবনের নানা জটিলতাকে পদার্থবিজ্ঞানের সহজ নিয়মের ভিত্তিতে ব্যাখ্যা করা যায়। গণিত এবং পদার্থবিজ্ঞান ব্যবহার করে জীবনের নানাবিধ রহস্য অনুসন্ধান ও বিভিন্ন ঘটনা বিশ্লেষণের মাধ্যমে এর গভীরে প্রবেশ করার শক্তিশালী মাধ্যম হলো জীবপদার্থবিজ্ঞান। জীবপদার্থবিজ্ঞান হলো জীববিজ্ঞান এবং পদার্থবিজ্ঞানের মধ্যে সেতুবন্ধ স্বরূপ।
১৪.২ জগদীশচন্দ্র বসুর অবদান
Contributions of Jagadish Chandra BoseEdit
আচার্য স্যার জগদীশচন্দ্র বসু ছিলেন একাধারে একজন প্রখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানী, অন্যদিকে একজন জীববিজ্ঞানী। আমদের উপমহাদেশে তিনিই প্রথম আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত বিজ্ঞানী। বসু পরিবারের আদি নিবাস ছিল ঢাকা জেলার অন্তর্গত বিক্রমপুরের রাঢ়িখাল নামক গ্রামে। ১৮৫৮ সালের ৩০ নভেম্বর জগদীশচন্দ্র বসু ময়মনসিংহে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা ভগবানচন্দ্র বসু ফরিদপুর জেলার একজন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন। প্রথমে ফরিদপুরের গ্রামীণ বিদ্যালয়ে মাতৃভাষায় লেখাপড়া শুরু করেন। পরে কোলকাতার হেয়ার স্কুল ও সেন্ট জেভিয়ার স্কুল ও কলেজে তাঁর ছাত্রজীবন অতিবাহিত হয়। ১৮৮০ সালে বি.এ পাশ করার পর ঐ বছরই তিনি উচ্চ শিক্ষার জন্য ইংল্যাণ্ড যান। ইংল্যাণ্ডে তার শিক্ষা জীবন ছিল ১৮৮০-১৮৮৪ সাল পর্যন্ত। ঐ সময়ে তিনি ক্যাম্ব্র্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিজ্ঞানে অনার্সসহ বি.এ এবং লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি.এসসি. ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৮৮৫ সালে তিনি প্রেসিডেন্সি কলেজে পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ে অধ্যাপনা শুরু করেন। প্রেসিডেন্সি কলেজে গবেষণার তেমন সুযোগ না থাকা সত্ত্বেও তিনি সেখানে গবেষণার কাজ চালিয়ে যান। দিনের বেলায় সময় না থাকায় বেশিরভাগ সময় তাঁকে রাতের বেলায় গবেষণার কাজ করতে হতো।
গবেষণাগারে তিনি কীভাবে দূরবর্তী স্থানে তারের সাহায্য ছাড়া কোনো রেডিও সংকেতকে পাঠানো যায় এ বিষয়ে বিস্তর গবেষণা করেন এবং সফল হন। ১৮৯৫ সালে তিনি ইতিহাসে প্রথম বারের মতো দূরবর্তী স্থানে বিনা তারে
রেডিও সংকেত প্রেরণ করে জনসমক্ষে দেখান। মাইক্রোওয়েভ গবেষণার ক্ষেত্রে তাঁর উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে। তিনিই প্রথম উৎপন্ন তরঙ্গের তরঙ্গদৈর্ঘ্যকে মিলিমিটার (প্রায় ৫ মিলিমিটার) পর্যায়ে নামিয়ে আনতে সক্ষম হন। তিনিই প্রথম রেডিও সংকেতকে শনাক্ত করার কাজে অর্ধপরিবাহি জংশনের ব্যবহার করেন। এই আবিষ্কার থেকে ব্যবসায়িক সুবিধা নেওয়ার পরিবর্তে তিনি তাঁর আবিষ্কারকে সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেন, যেন অন্যরা এই গবেষণাকে আরো সমৃদ্ধ করার সুযোগ পায়। পরবর্তীকালে জগদীশচন্দ্র বসু উদ্ভিদ শারীরতত্ত্বের উপর অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment