Wednesday, February 1, 2017

কাজ, ক্ষমতা ও শক্তি


কাজ, ক্ষমতা ও শক্তি
 Share
সূচিপত্র

ভৌত রাশি ও পরিমাপ
গতি
বল
কাজ, ক্ষমতা ও শক্তি
পদার্থের অবস্থা ও চাপ
বস্তুর উপর তাপের প্রভাব
তরঙ্গ ও শব্দ
আলোর প্রতিফলন
আলোর প্রতিসরণ
দশম অধ্যায় স্থিরতড়িৎ
একাদশ অধ্যায় চল তড়িৎ
তড়িতের চৌম্বক ক্রিয়া
আধুনিক পদার্থবিজ্ঞান ও ইলেকট্রনিক্স
জীবন বাঁচাতে পদার্থবিজ্ঞান
সূত্রাবলি


[আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে কোনো কিছু করাকে কাজ বলা হলেও পদার্থবিজ্ঞানে কাজ দ্বারা একটি সুনির্দিষ্ট ধারণাকে বুঝায়। এই অধ্যায়ের শুরুতে আমরা সেই ধারণাকে উপস্থাপিত করব। বিজ্ঞানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে শক্তি। আমরা আমাদের অভিজ্ঞতা থেকে দেখি শক্তি ছাড়া জগৎ অচল। বিভিন্নরূপে আমরা শক্তি পাই। গতিশীল বস্তুর জন্য গতিশক্তি, ভূপৃষ্ঠের খানিক উপরে বস্তুর অবস্থানের জন্য বিভব শক্তি, একটি সংকোচিত বা প্রসারিত স্প্রিং এর শক্তি, গরম বস্তুর তাপ শক্তি, আহিত বস্তুর তড়িৎ শক্তি ইত্যাদি। শক্তি ক্রমাগত এক রূপ থেকে অন্য রূপে রূপান্তরিত হচ্ছে, যদিও মহাবিশ্বের মোট শক্তির পরিমাণ অপরিবর্তনীয় এবং সুনির্দিষ্ট। এই অধ্যায়ে আমরা শক্তির রূপান্তরের ঘটনা এবং বিজ্ঞানের গুরুত্বপূর্ণ নীতিগুলোর একটি শক্তির সংরক্ষণশীলতার নীতি নিয়ে আলোচনা করব।]

৪.১ কাজ
WorkEdit
দৈনন্দিন জীবনে কোনো কিছু করাকে কাজ বললেও বিজ্ঞানে কিন্তু কোনো কিছু করা হলেই কাজ হয় না। বিজ্ঞানে কাজ একটি বিশেষ অর্থ বহন করে। একজন দারোয়ান সারাক্ষণ বসে বসে একটি বাসা পাহারা দিলেন। তিনি বলবেন তিনি তার কাজ করেছেন। কোনো স্রোতের নদী বা খালে একটি নৌকা ভেসে যাচ্ছিল, করিম সাহেব সেটাকে টেনে ধরে রাখছেন। তিনি বলবেন তিনি কাজ করে নৌকাটিকে ঠেকিয়ে রেখেছেন নতুবা সেটি স্রোতের টানে কোথায় ভেসে যেত। দৈনন্দিন জীবনে এগুলোকে কাজের স্বীকৃতি দিলেও বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে কিন্তু এগুলো কাজ হয়নি। বরং দারোয়ান বসে বসে পাহারা না দিয়ে যদি হেঁটে হেঁটে পাহারা দিতেন কিংবা নৌকাটি যদি স্রোতের টানে ভেসে যেত তাহলে কিছু কাজ হতো। বিজ্ঞানে কাজের অর্থ দৈনন্দিন জীবনে কাজের অর্থের চেয়ে ভিন্নতর। আসলে বিজ্ঞানে কাজ হতে গেলে বল ও তার সাথে সরণ সংশ্লিষ্ট থাকতে হয়। কোনো বস্তুর উপর কোনো বল ক্রিয়া করে যদি বস্তুটির কিছু সরণ ঘটায় তাহলে কেবল কাজ হয়। আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে আমাদের চারপাশে কাজের অনেক উদাহরণ দেখতে পাই। বলদ মাঠে লাঙল টানছে, একজন শ্রমিক ঠেলা গাড়ি ঠেলছেন, ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় কেউ লৌহ গোলক নিক্ষেপ করছে ইত্যাদি।
নিচের উদাহরণগুলো বিবেচনা করা যাক:

(ক) রতন এক প্যাকেট বই হাত দিয়ে ধরে দাঁড়িয়ে আছে।
(খ) মিতা পদার্থবিজ্ঞান বইখানাকে ঠেলে টেবিলের উপর দিয়ে এক প্রান্তথেকে অন্য প্রান্তেনিয়ে যচ্ছে।
(গ) নীরুএকটি ভারী ব্যাগকে সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠাচ্ছে।
(ঘ) রিমি জোরে দেয়ালকে ঠেলছে।
যেহেতু একটি বল দ্বারা কোনো বস্তু গতিশীল হলেই কেবল কাজ হয়, সুতরাং উল্লিখিত উদাহরণগুলোতে (খ) এবং (গ)-এর ক্ষেত্রে কাজ হয়েছে; কিন্তু (ক) এবং (ঘ) এর ক্ষেত্রে কোনো কাজ হয়নি। আমরা কোনো বস্তুকে উপরে উঠাতে বা নিচে নামাতে বা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নিতে বল প্রয়োগ করতে পারি। আমরা বল প্রয়োগ করে কোনো বস্তুর আকার পরিবর্তন করতে পারি। এ সকল ক্ষেত্রে কাজ হয়।
যদি একজন নির্মাণ শ্রমিক দশখানা ইট নিয়েকোনো ভবনের দোতলায় উঠেন, তবে তিনি একখানা ইট নিয়ে ঐ দোতলায় উঠলে যে কাজ করতেন তার চেয়ে বেশি কাজ করবেন, কেননা তাকে বেশি বল প্রয়োগ করতে হয়। তাকে আরো বেশি কাজ করতে হবে যদি তিনি ঐ দশখানা ইটই তিনতলায় উঠান। সুতরাং কাজের পরিমাণ নির্ভর করে প্রযুক্ত বলের উপর এবং দূরত্বের উপর। কোনো বস্তুর উপর প্রযুক্ত বল এবং বলের দিকে বস্তুর অতিক্রান্তদূরত্বের গুণফল দ্বারা কাজ পরিমাপ করা হয়। সুতরাং,
কাজ = বল × বলের দিকে অতিক্রান্ত দূরত্ব।


কোনো বস্তুর উপর F বল প্রয়োগে যদি বস্তুটি বলের দিকে s দূরত্ব অতিক্রম করে (চিত্র ৪.১) তবে কৃত কাজ W হবে,
W= Fs ....................(৪.১)
কাজের কোনো দিক নেই। কাজ একটি স্কেলার রাশি।
কাজের মাত্রা: কাজের মাত্রা হবে বল × সরণের মাত্রা
কাজ = বল × সরণ = ভর × ত্বরণ × সরণ







[W]==

কাজের একক: বলের একককে দূরত্বের একক দিয়ে গুণ করলে কাজের একক পাওয়া যায়। যেহেতু বলের একক নিউটন (N) এবং দূরত্বের একক হলো মিটার (m), সুতরাং কাজের একক হবে নিউটন-মিটার (Nm)। একে জুল বলা হয়। জুলকে J দিয়ে প্রকাশ করা হয়। কোনো বস্তুর উপর এক নিউটন বল প্রয়োগের ফলে যদি বস্তুটির বলের দিকে এক মিটার সরণ হয় তবে সম্পন্ন কাজের পরিমাণকে এক জুল বলে।
1J+ 1Nm
যদি বল প্রয়োগের ফলে বস্তু বলের দিকে সরে যায় তাহলে সেই কাজকে বলের দ্বারা কাজ বলে।
একটি ডাস্টার টেবিলের উপর থেকে মেঝেতে ফেলে দিলে ডাস্টারটি অভিকর্ষ বলের প্রভাবে নিচের দিকে পড়বে। এক্ষেত্রে অভিকর্ষ দ্বারা কাজ হয়েছে।
যদি বল প্রয়োগের ফলে বস্তু বলের বিপরীত দ

No comments:

Post a Comment