Wednesday, January 11, 2017

চল তড়িৎ

একাদশ অধ্যায় চল তড়িৎ
সূচিপত্র

Podarthobiggan, 11.jpg
[আমাদের দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমরা তড়িৎ বা বিদ্যুতের উপর নির্ভর করে থাকি। আধুনিক যন্ত্রপাতি বা সরঞ্জামের প্রায় সবই তড়িতের সাহায্যে চলে। আমরা তড়িতের উপর এতটাই নির্ভরশীল যে, তড়িত ছাড়া আমাদের জীবন কেমন হবে তা কল্পনাও করতে পারি না। পূর্ববর্তী অধ্যায়ে আমরা স্থির তড়িৎ নিয়ে আলোচনা করেছি। এ অধ্যায়ে আমরা চল তড়িতের বিভিন্ন বৈদ্যুতিক রাশি যেমনÑতড়িৎ প্রবাহমাত্রা, রোধ, তড়িচ্চালক শক্তি এবং বিভব পার্থক্য সম্পর্কে জানতে পারব। এছাড়াও তড়িৎ প্রবাহের দিক, পরিবাহী, অপরিবাহী এবং অর্ধপরিবাহী, তড়িৎ বর্তনী, ওহমের সূত্র, স্থির এবং পরিবর্তনশীল রোধ, রোধের নির্ভরশীলতা, রোধের শ্রেণি ও সমান্তরাল সমবায়, তড়িৎ ক্ষমতার হিসাব, তড়িতের সিস্টেম লস এবং লোডশেডিং, তড়িতের নিরাপদ ও কার্যকর ব্যবহার নিয়ে আলোচনা করব।]

Contents
১১.১। স্থির তড়িৎ হতে চল তড়িৎ সৃষ্টি
Production of current electricity from static electricity
তড়িৎ প্রবাহের মান, দিক ও একক
তড়িৎ প্রবাহ
দুটি ভিন্ন বিভবের বস্তুকে যখন পরিবাহী তার দ্বারা সংযুক্ত করা হয়, তখন নিম্ন বিভবের বস্তু থেকে উচ্চ বিভবের বস্তুতে ইলেকট্রন প্রবাহিত হয়। যতক্ষণ পর্যন্ত বস্তুদ্বয়ের মধ্যে বিভব পার্থক্য শূন্য না হয় ততক্ষণ পর্যন্ত এই প্রবাহ বজায় থাকে। কোনো প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যদি বস্তুদ্বয়ের মধ্যে বিভব পার্থক্য বজায় রাখা যায় তখন এই ইলেকট্রন প্রবাহ নিরবচ্ছিন্নভাবে চলতে থাকে। ইলেকট্রনের এই নিরবচ্ছিন্ন প্রবাহই হলো তড়িৎ প্রবাহ।
কোনো পরিবাহীর যে কোনো প্রস্থচ্ছেদের মধ্য দিয়ে একক সময়ে যে পরিমাণ আধান প্রবাহিত হয় তাকে তড়িৎ প্রবাহ বলে। কোনো পরিবাহীর যে কোনো প্রস্থচ্ছেদের মধ্য দিয়ে t সময়ে যদি Q পরিমাণ আধান প্রবাহিত হয়, তাহলে তড়িৎ প্রবাহ http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?Iহবে,
http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%20I=%20%5Cfrac%20%7BQ%7D%20%7Bt%7D
একক : তড়িৎ প্রবাহের একক হলো অ্যাম্পিয়ার।
কোনো বিচ্ছিন্ন আহিত পরিবাহীতে আধান এর পৃষ্ঠে অবস্থান করে এবং চলাচল করতে পারে না। এ ধরনের আধানকে বলা হয় স্থির তড়িৎ আধান। যদি এই আধানের চলাচলের জন্য পরিবহন পথের ব্যবস্থা করা হয় তখন এই আধান পরিবাহীতে আবদ্ধ না থেকে প্রবাহিত শুরু করে। যখন এমনটি ঘটে, তখন আমরা বলি যে, তড়িৎ প্রবাহের সৃষ্টি হয়েছে।
একে A দ্বারা সূচিত করা হয়। শূন্য মাধ্যমে কোনো পরিবাহীর যে কোনো প্রস্থচ্ছেদের মধ্য দিয়ে 1s -1C আধান প্রবাহিত হলে যে পরিমাণ তড়িৎ প্রবাহের সৃষ্টি হয় তাকে 1A বলে।
http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%20%5Ctherefore%20I=%20%5Cfrac%20%7B1C%7D%20%7B1s%7D=%201Cs%5E%7B-1%7D=%201A
Podarthobiggan, 11.1.jpg
গতিশীল আধান কর্তৃক কীভাবে চলতড়িৎ উৎপন্ন হয় তা উপরের ১১.১ চিত্রের বর্তনীর আলোকে বর্ণনা করা হলো। শুরুতেই দুটি প্লাগ চাবি K1 এবং K2 উঠিয়ে ফেলা হয় এবং ধাতব পাত A এবং B কে হাত দ্বারা স্পর্শ করে অনাহিত করা হয়। এবার চাবি K1 বন্ধ করে দিলে উচ্চ বিভব উৎসটি ধাতব পাত দুটির সাথে সংযুক্ত হবে।
এরপর উচ্চ বিভব উৎসের সুইচটি অন্ করে ধাতব পাত দুটিকে সমপরিমাণ ধনাত্বক এবং ঋণাত্বক আধানে আহিত করা হয়। এবার চাবি K1 খুলে ফেলে এবং K2 চাবি প্লাগে প্রবেশ করালে ধনাত্বক এবং ঋণাত্বক আধানে আহিত পাত দুটি গ্যালভানোমিটারের সাথে সংযোগের ফলে একটি অবিচ্ছিন্ন পরিবহণ পথের সৃষ্টি করবে। এখানে গ্যালভানোমিটার হলো এমন একটি যন্ত্র যা তড়িৎ প্রবাহের অস্তিত্ব নির্ণয় করতে পারে। দেখা যাবে গ্যালভানোমিটারের কাঁটাটি ক্ষণিকের জন্য একদিকে বিক্ষিপ্ত হয়েছে এবং পরক্ষণেই তা পূর্বের অবস্থানে ফিরে এসেছে।
গ্যালভানোমিটারের বিক্ষেপ নির্দেশ করে যে তড়িৎ প্রবাহের সৃষ্টি হয়েছে। এই তড়িৎ প্রবাহ কীভাবে সৃষ্টি হলো? ঋণাত্বক আধানে আহিত পাত B থেকে ইলেকট্রন গ্যালভানোমিটারের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ধনাত্বক আধানে আহিত পাত A -এ পৌছায় এবং এর ফলে তড়িৎ প্রবাহের সৃষ্টি হয়।
A
পাতের ধনাত্বক আধান, B পাত থেকে আগত ঋণাত্বক আধানগ্রস্ত ইলেকট্রন দ্বারা নিষ্ক্রিয় হয়। যার ফলে ধাতব পাত দুটির আধান ক্ষরণের মাধ্যমে ক্ষণস্থায়ী প্রবাহের সৃষ্টি হয়, যা গ্যালভানোমিটারের বিক্ষেপ দ্বারা সনাক্ত করা যায়।
১১.২। তড়িৎ প্রবাহের দিক এবং ইলেকট্রন প্রবাহের দিক
Direction of electricity and direction of electron flow
প্রথম যখন চল তড়িৎ আবিষ্কৃত হয়, তখন মনে করা হতো যে ধনাত্বক আধানের প্রবাহের ফলে তড়িৎ প্রবাহের সৃষ্টি হয় এবং এই ধনাত্মক আধান উচ্চতর বিভব থেকে নিম্নতর বিভবের দিকে প্রবাহিত হয়। তাই তড়িৎ প্রবাহের প্রচলিত দিক ধরা হয় উচ্চতর বিভব থেকে নিম্নতর বিভবের দিকে অথবা তড়িৎ কোষের ধনাতœক পাত থেকে ঋণাত্বক পাতের দিকে। কিন্তু আমরা জানি যে, প্রকৃতপক্ষে তড়িৎ প্রবাহ হলো ঋণাত্বক আধান তথা ইলেকট্রনের প্রবাহের জন্য, ফলে তড়িৎ প্রবাহের প্রকৃত দিক হলো নিম্নতর বিভব থেকে উচ্চতর বিভবের দিকে অর্থাৎ তড়িৎ কোষের ঋণাত্বক পাত থেকে ধনাত্বক পাতের দিকে। সুতরাং তড়িৎ প্রবাহের প্রকৃত দিক প্রচলিত দিকের বিপরীত। চিত্রে প্রদর্শিত তীর চিহ্ন তড়িৎ প্রবাহের প্রচলিত দিক নির্দেশ করছে।
Podarthobiggan, 11.2.jpg
বর্তনী চিত্র অঙ্কন করার সময় আমরা তড়িৎ প্রবাহের প্রচলিত দিককেই অনুসরণ করব।
১১.৩। তড়িৎ প্রতীক
Electric symbols
তড়িৎ প্রবাহ চলার সম্পূর্ণ পথকে তড়িৎ বর্তনী বা circuit বলে। যখন কোনো কোষের পাত দুটিকে কোনো রোধকের দুই প্রান্ত বা তড়িৎ উপকরণের দুই প্রান্তের সাথে সংযুক্ত করা হয়, তখন একটি তড়িৎ বর্তনী তৈরি হয়। চলতড়িৎ পাঠের সময় আমাদেরকে সহজ এবং পরিষ্কার বর্তনী চিত্র আঁকতে হয়। নিচের সারণিতে কিছু বৈদ্যুতিক উপকরণের প্রতীক দেখানো হলো যেগুলো সাধারণত তড়িৎ বর্তনী আঁকতে ব্যবহৃত হয়।
১১.১: বর্তনীর প্রতীকসমূহ
Podarthobsfiggan, 11.jpg
নিজে কর:
একটি সুইচ, তড়িৎ কোষ, স্থির মানের রোধ এবং অ্যামিটার ব্যবহার করে একটিশ্রেণি বর্তনী অঙ্কন কর। এবার একটি ভোল্টমিটারকে স্থির মানের রোধের দুই প্রান্তে সমান্তরালে যুক্ত কর।
১১.৪। পরিবাহী, অপরিবাহী এবং অর্ধপরিবাহী
Conductor, insulator, semiconductor
আমরা জানি, তড়িৎ প্রবাহ হলো কোনো পদার্থের মধ্য দিয়ে আধানের প্রবাহ। এই তড়িৎ প্রবাহ কোনো কোনো পদার্থের মধ্য দিয়ে খুব সহজেই চলাচল করতে পারে। আবার এমন কিছু পদার্থ আছে যেগুলোর মধ্য দিয়ে তড়িৎ আদৌ চলাচল করতে পারে না। তড়িৎ পরিবাহিতা ধর্মের উপর ভিত্তি করে কঠিন পদার্থকে তিন শ্রেণিতে ভাগ করা যায়। যথা- (১) পরিবাহী (২) অপরিবাহী (৩) অর্ধপরিবাহী।
১. পরিবাহী: যে সকল পদার্থের মধ্য দিয়ে খুব সহজেই তড়িৎ প্রবাহ চলতে পারে তাদেরকে পরিবাহী বলে। এসকল পদার্থের মধ্য দিয়ে ইলেকট্রন মুক্তভাবে চলাচল করতে পারে। ধাতব তারের মধ্য দিয়ে আধান ইলেকট্রন দ্বারা পরিবাহিত হয়। এ কারণে ধাতব পদার্থগুলো তড়িৎ সুপরিবাহী। তামা, রুপা, অ্যালুমিনিয়াম ইত্যাদি সুপরিবাহী পদার্থ। যে কারণে বৈদ্যুতিক সংযোজকে ধাতব তার ব্যবহার করা হয়।
২. অপরিবাহী: যে সকল পদার্থের মধ্য দিয়ে তড়িৎ প্রবাহ চলতে পারে না তাদেরকে অপরিবাহী বা অন্তরক পদার্থ বলে। অর্থাৎ যে সকল পদার্থের মধ্য দিয়ে ইলেকট্রন চলাচল করতে পারে না সেগুলো হলো অপরিবাহী পদার্থ। যেমন- প্লাষ্টিক, রাবার, কাঠ, কাচ ইত্যাদি। অপরিবাহী পদার্থের মধ্যে মুক্ত ইলেকট্রন থাকে না। প্লাষ্টিক জাতীয় পদার্থের মধ্য দিয়ে সহজে ইলেকট্রন প্রবাহিত হতে পারে না। যার ফলে প্লাষ্টিক হলো বিদ্যুতের জন্য অপরিবাহী পদার্থ। এ কারণেই বৈদ্যুতিক মিস্ত্রিগণ যে সকল স্ক্রু ড্রাইভার এবং প্লায়ার ব্যবহার করেন তাদের হাতল প্লাষ্টিক জাতীয় পদার্থ দ্বারা মোড়ানো থাকে। এ ছাড়া আমাদের দৈনন্দিন প্রয়োজনে যে সকল তামার বৈদ্যুতিক তার ব্যবহার করি সেগুলো প্লাষ্টিক দ্বারা আবৃত থাকে।
৩. অর্ধপরিবাহী: যে সকল পদার্থের তড়িৎ পরিবহন ক্ষমতা সাধারণ তাপমাত্রায় পরিবাহী এবং অপরিবাহী পদার্থের মাঝামাঝি, সে সকল পদার্থকে অর্ধপরিবাহী বলে। যেমন- জার্মেনিয়াম, সিলিকন ইত্যাদি। সুবিধামত অপদ্রব্য মিশিয়ে অর্ধপরিবাহী পদার্থের তড়িৎ পরিবাহকত্ব বৃদ্ধি করা যায়।
১১.৫। বিভব পার্থক্য এবং তড়িৎ প্রবাহের মধ্যে সম্পর্ক: ওমের সূত্র
Relationship between potential difference and electricity- Ohm’s law
আমরা জানি কোনো পরিবাহীর দুই প্রান্তের মধ্যে বিভব পার্থক্য থাকলে তার মধ্য দিয়ে তড়িৎ প্রবাহিত হয়। এই তড়িৎ প্রবাহের মান নির্ভর করে পরিবাহীর দুই প্রান্তে কী পরিমাণ বিভব পার্থক্য প্রয়োগ করা হয়েছে তার উপর, পরিবাহী এবং তার তাপমাত্রার উপর। জর্জ সাইমন ওম কোনো পরিবাহী তারের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত তড়িৎ প্রবাহমাত্রা এবং এর দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্যের মধ্যে যে সম্পর্ক রয়েছে সে বিষয়ে নিম্নবর্ণিত সূত্র প্রদান করেন যা ওমের সূত্র নামে পরিচিত।
মের সূত্র
তাপমাত্রা স্থির থাকলে কোনো পরিবাহীর মধ্য দিয়ে যে তড়িৎ প্রবাহ চলে তা ঐ পরিবাহীর দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্যের সমানুপাতিক। সমানুপাতিক বলতে বুঝায় যদি পরিবাহীর দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্য দ্বিগুণ করা হয়, তবে পরিবাহীর মধ্য দিয়ে প্রবাহিত তড়িৎ প্রবাহ দ্বিগুণ হবে। আবার, যদি পরিবাহীর দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্য এক-তৃতীয়াংশ করা হয়, তবে পরিবাহীর মধ্য দিয়ে প্রবাহিত তড়িৎ প্রবাহও এক-তৃতীয়াংশ হবে।
মনে করি, AB একটি পরিবাহী তার। এর দুই প্রান্তের বিভব যথাক্রমে VA এবং VB [ চিত্র ১১.৩]। যদি VA > VB হয়, তাহলে পরিবাহীর দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্য হবে V = VA - VB
Podarthobiggan, 11.3.jpg
এখন স্থির তাপমাত্রায় পরিবাহীর মধ্য দিয়ে প্রবাহিত তড়িৎ প্রবাহ I হলে, মের সূত্রানুসারে,
Podarthobiggan, 11.4.jpg
http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%20I%20%5Calpha%20V

http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%20=%20%5Cfrac%20%7BV%7D%20%7BI%7D%20=%20R= ধ্রুবক

এই ধ্রুবককে ঐ তাপমাত্রায় ঐ পরিবাহীর রোধ বলে। অথবা,
http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%20I=%20%5Cfrac%20%7BV%7D%20%7BR%7D
একটি ছক কাগজের X অক্ষ বরাবর পরিবাহীর দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্য V এবং Y অক্ষ বরাবর তড়িৎ প্রবাহ ও স্থাপন করে লেখচিত্র অঙ্কন করলে এটি মূলবিন্দুগামী একটি সরলরেখা হবে [ চিত্র ১১.৪ ]।
গাণিতিক উদাহরণ ১১.১ : একটি মোটর গাড়ির হেডলাইটের ফিলামেন্টের মধ্যদিয়ে 4A তড়িৎ প্রবাহিত হচ্ছে। ফিলামেন্টের প্রান্তদ্বয়ের বিভব পার্থক্য 12V হলে এর রোধ কত?
আমরা জানি,
http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%20I=%20%5Cfrac%20%7BV%7D%20%7BR%7D
বা, http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%20R=%20%5Cfrac%20%7BV%7D%20%7BI%7D
http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%20=%20%5Cfrac%20%7B12V%7D%20%7B4A%7D
http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%20=3%20%5COmegaউ:http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%203%20%5COmega
এখানে,
তড়িৎ প্রবাহ, I = 4A
বিভব পার্থক্য , V = 12V
রোধ , R= ?
১১.৬। রোধ: স্থির এবং পরিবর্তী রোধ
Resistance : constant and variable
আমরা জানি, তড়িৎ প্রবাহ হলো ইলেকট্রনের প্রবাহ। ইলেকট্রন কোনো পরিবাহীর মধ্য দিয়ে চলার সময় এর অভ্যন্তরের অণু-পরমাণুর সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। ফলে এদের গতি বাধাগ্রস্ত হয় এবং তড়িৎ প্রবাহ বিঘিœত হয়। পরিবাহীর এই ধর্মকে রোধ বলে। ওমের সূত্র থেকে আমরা পাই,
নির্দিষ্ট তাপমাত্রায়, রোধ http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%20R=%20%5Cfrac%20%7BV%7D%20%7BI%7D
তারের দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্যতারের তড়িৎপ্রবাহ

অর্থাৎ, নিদিষ্ট তাপমাত্রায় কোনো পরিবাহী দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্য এবং তড়িৎপ্রবাহ I এর অনুপাত দ্বারা ঐ তাপমাত্রায় ঐ পরিবাহীর রোধ পরিমাপ করা হয়।
রোধের SI একক হলো ওম। একে বড় হরফের ওমেগা (http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%20%5COmega) দ্বারা প্রকাশ করা হয়। যে পরিবাহীর দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্য 1V হলে তার মধ্য দিয়ে 1A তড়িৎ প্রবাহ চলে, তার রোধকে 1http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%20%5COmega বলে। রোধক: নির্দিষ্ট মানের রোধবিশিষ্ট যে পরিবাহী তার কোনো বর্তনীতে ব্যবহার করা হয় তাকে রোধক বলে। রোধক ব্যবহারের প্রাথমিক উদ্দেশ্য হলো বর্তনীতে প্রবাহিত তড়িতের মান নিয়ন্ত্রণ করা। বর্তনীতে ব্যবহৃত রোধক দুই প্রকার। যথা-
  • ১. স্থির মানের রোধক
  • ২. পরিবর্তী রোধক
১. স্থির মানের রোধক: যে সকল রোধকের রোধের মান নির্দিষ্ট তাদেরকে স্থির মানের রোধক বলে।
সাধারণত ল্যাবরেটরিতে যে সকল স্থির মানের রোধক ব্যবহার করা হয় সেগুলো ১১.৫ নং চিত্রে দেখানো হলো:
Podarthobilggan- 11.5.jpg
Podarthobilggan- 11.6.jpg
২. পরিবর্তী রোধক: পরিবর্তী রোধক হলো সেই সকল রোধক যাদের রোধের মান প্রয়োজন অনুযায়ী পরিবর্তন করা যায়। এদেরকে রিওস্টেটও বলা হয়। কোনো বর্তনীতে যখন তড়িৎ প্রবাহের মানের পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয় তখনই কেবল বর্তনীতে রিওস্টেট অর্ন্তভূক্ত করা হয়।

১১.৬ নং চিত্রে ল্যাবরেটরিতে সাধারণত যে ধরনের রিওস্টেট ব্যবহার করা তা দেখানো হয়েছে।
১১.৭ তড়িচ্চালক শক্তি এবং বিভব পার্থক্য
Electromotive force and potential difference
তড়িচ্চালক শক্তি
কোনো বর্তনীতে তড়িৎ প্রবাহ চালনা করার জন্য তড়িৎশক্তির প্রয়োজন হয়। কোনো তড়িৎ উৎস একক ধনাত্মক আধানকে বর্তনীর এক বিন্দু থেকে উৎসসহ সম্পূর্ণ বর্তনী ঘুরিয়ে আবার ঐ বিন্দুতে আনতে যে পরিমাণ কাজ সম্পন্ন করে, তথা উৎস যে তড়িৎশক্তি ব্যয় করে, তাকে ঐ উৎসের তড়িচ্চালক শক্তি বলে। যদি Q আধানকে সম্পূর্ণ বর্তনী ঘুরিয়ে আনতে WJ পরিমাণ কাজ সম্পন্ন হয়, তাহলে 1C আধানকে সম্পূর্ণ বর্তনী ঘুরিয়ে আনতে কাজের পরিমাণ হবেhttp://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%20%5Cfrac%20%7BW%7D%20%7BQ%7Dঅতএব উৎসের তড়িচ্চালক শক্তি,
http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%20E=%20%5Cfrac%20%7BW%7D%20%7BQ%7D
একক: তড়িচ্চালক শক্তির SI একক হলো JC-1 যাকে ভোল্ট (V) বলা হয়। যে সকল যন্ত্র অন্য কোনো ধরনের শক্তিকে তড়িৎশক্তিতে রূপান্তরিত করতে পারে তাদেরই কেবল তড়িচ্চালক শক্তি আছে। যেমন- কোষ, জেনারেটর ইত্যাদি। তড়িৎকোষ রাসায়নিক শক্তিকে তড়িৎশক্তিতে রূপান্তরিত করে এবং জেনারেটর যান্ত্রিক শক্তিকে তড়িৎশক্তিতে রূপান্তরিত করে। কোনো কোষের তড়িচ্চালক শক্তি কোষসহ বর্তনীর বিভিন্ন অংশে যে সকল বিভব পার্থক্যের সৃষ্টি হয় তাদের যোগফলের সমান। বিভব পার্থক্যঃ পরিবাহী দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্যের কারণে পরিবাহীর মধ্য দিয়ে তড়িৎ প্রবাহিত হয়। একক ধনাত্বক আধানকে বর্তনীর এক বিন্দু থেকে অপর বিন্দুতে স্থানান্তর করতে যে পরিমাণ কাজ সম্পন্ন হয় তাকে ঐ দুই বিন্দুর বিভব পার্থক্য বলে। ড্রাইসেল দিয়ে টর্চ জ্বালালে সেল যে তড়িৎ শক্তি সরবরাহ করে তা আলো ও তাপ শক্তিতে রূপান্তরিত হয়।
শক্তির এই রূপান্তর প্রক্রিয়ায় শক্তির নিত্যতা সংরক্ষিত হয়। বাল্বের মধ্য দিয়ে একক আধান স্থানান্তরের ফলে যে পরিমাণ শক্তি রূপান্তরিত হয় তার পরিমাণই হলো বাল্বের দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্য।
সুতরাং বৈদ্যুতিক বর্তনীর দুটি বিন্দুর মধ্য দিয়ে একক ধনাত্বক আধান স্থানান্তরিত হলে যে পরিমাণ তড়িৎশক্তি অন্য কোনো ধরনের শক্তিতে (যেমন- তাপ ও আলো) রূপান্তরিত হয়, তার পরিমাণই ঐ দুই বিন্দুর বিভব পার্থক্য। Q আধান স্থানান্তরের জন্য রূপান্তরিত তড়িৎশক্তির পরিমাণ W হলে, ঐ দুই বিন্দুর বিভব পার্থক্য হলো
http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%20V=%20%5Cfrac%20%7BW%7D%20%7BQ%7D
বিভব পার্থক্য এবং তড়িচ্চালক শক্তির SI একক অভিন্ন। অর্থাৎ ভোল্ট (V)দুটি বিন্দুর বিভব পার্থক্য 1 ভোল্ট হবে যদি 1 কুলম্ব ধনাত্বক আধান বর্তনীর ঐ দুই বিন্দুর মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হবার ফলে 1 জুল তড়িৎশক্তি অন্য কোনো ধরণের শক্তিতে রূপান্তরিত হয়।
পরীক্ষণ :
ভোল্টমিটারের সাহায্যে একটি ড্রাইসেলের দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্য পরিমাপ কর এটিই কোষের তড়িচ্চালক শক্তি। এবার কোষটি দিয়ে টর্চের বাল্ব জ্বালানো অবস্থায় কোষের দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্য পরিমাপ কর।
প্রবাহ চলাকালীন ভোল্টমিটারের পাঠই হলো বাল্বের বা রোধের দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্য Vএবার পরিমাপকৃত তড়িচ্চালকশক্তি এবং বিভব পার্থক্যের মানের তুলনা কর। তুমি দেখতে পাবে E -এর মান V -এর মানের চেয়ে বড়।
১১.৮ রোধের নির্ভরশীলতা
Dependence of resistance
আমরা জানি, যখন তাপমাত্রা এবং অন্যান্য ভৌত অবস্থা (যেমন- দৈর্ঘ্য, প্রস্থচ্ছেদ, উপাদান) অপরিবর্তিত থাকে তখন পরিবাহীর রোধ স্থির থাকে।
কোনো পরিবাহীর রোধ নিম্নের চারটি বিষয়ের উপর নির্ভর করে।
  • ১. পরিবাহীর দৈর্ঘ্য
  • ২. পরিবাহীর প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফল
  • ৩. পরিবাহীর উপাদান এবং
  • ৪. পরিবাহীর তাপমাত্রা
তাপমাত্রা স্থির থাকলে কোনো পরিবাহীর রোধ শুধুমাত্র এর দৈর্ঘ্য, প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফল এবং উপাদানের উপর নির্ভর করে। রোধের এই নির্ভরশীলতা দুইটি সূত্রের সাহায্যে প্রকাশ করা যায়।
১১.৭ চিত্রে একই প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফল এবং একই উপাদান দ্বারা তৈরি দুটি পরিবাহী তার P এবং Q দেখানো হয়েছে। P তারের দৈর্ঘ্য Q তারের চেয়ে বেশি। বেশি হওয়ায় তার রোধও বেশি।
Podarthobilggan- 11.7.jpg
দৈর্ঘ্যরে সূত্র: নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় নির্দিষ্ট উপাদানের পরিবাহীর প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফল স্থির থাকলে পরিবাহীর রোধ এর দৈর্ঘ্যরে সমানুপাতিক।
পরিবাহির দৈর্ঘ্য L, প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফল A এবং রোধ R হলে, এই সূত্রানুসারে
http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%20R%20%5Cpropto%20Lযখন তাপমাত্রা, উপাদান এবং A ধ্রুব থাকে। .... .... .... .... ....(11.1)
১১.৮ চিত্রে একই দৈর্ঘ্যরে এবং একই উপাদান দ্বারা তৈরি দুটি পরিবাহী তার S এবং T দেখানো হয়েছে। S তারের প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফল T তারের প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফল অপেক্ষা বেশি। যে তারের প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফল বেশি তার রোধ কম। চিত্র ১১.৮
Podarthobilggan- 11.8.jpg
প্রস্থচ্ছেদের সূত্র: নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় নির্দিষ্ট উপাদানের পরিবাহীর দৈর্ঘ্য স্থির থাকলে পরিবাহীর রোধ এর প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফলের ব্যস্তানুপাতিক।
অর্থাৎ http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%20R%20%5Cpropto%20%5Cfrac%20%7B1%7D%20%7BA%7Dযখন তাপমাত্রা, উপাদান এবং L ধ্রুব থাকে .... .... .... .... .... (11.2)
১১.৯। আপেক্ষিক রোধ এবং পরিবাহকত্ব
Resitivity and conductivity
নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় নির্দিষ্ট উপাদানের পরিবাহীর রোধ তার দৈর্ঘ্যের সমানুপাতে এবং প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফলের ব্যস্তানুপাতে পরিবর্তিত হয়। সুতরাং রোধের সূত্র থেকে পাই,
http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%20R%20%5Cpropto%20%5Cfrac%7BL%7D%7BA%7Dযখন তাপমাত্রা ও উপাদান ধ্রব থাকে।
অথবা http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%20R%20=%20%5Crho%20%5Cfrac%7BL%7D%7BA%7D.... .... .... .... .... (11.3)
এখানে http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%20%5Crhoএকটি ধ্রুবক, যার মান পরিবাহীর উপাদান এবং তাপমাত্রার উপর নির্ভরশীল। একে ঐ তাপমাত্রায় পরিবাহীর উপাদানের রোধকত্ব বা আপেক্ষিক রোধ বলে।
(11.3)
সমীকরণে L=1 একক এবং A=1 একক হলে, A=R হয়।
অর্থাৎ কোনো নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় একক দৈর্ঘ্য ও একক প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফলবিশিষ্ট কোনো পরিবাহীর রোধকে ঐ তাপমাত্রায় এর উপাদানের আপেক্ষিক রোধ বলে।
নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় কোনো পরিবাহীর রোধ এর ভৌত অবস্থার (যেমন দৈর্ঘ্য, প্রস্থচ্ছেদ ইত্যাদি) উপর নির্ভর করে। কিন্তু এর আপেক্ষিক রোধ শুধুমাত্র এর উপাদানের উপর নির্ভরশীল।
আপেক্ষিক রোধের একক: (11.3) সমীকরণকে সাজিয়ে লেখা যায়, http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%20%5Crho%20=%20R%20%5Cfrac%20%7BA%7D%20%7BL%7D
সমীকরণের ডানপাশের রাশিগুলোর একক বসিয়ে রোধকত্ব http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%20%5Crho-এর একক পাওয়া যায়। http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%20%5Cfaac%20%7B%5COmega%20m%5E2%7D%20%7Bm%7D=%20%5COmega%20m
তাৎপর্য: 20°C তাপমাত্রায় রুপার রোধকত্ব 1.6×10−8Ωmঅর্থাৎ 20°C তাপমাত্রায় 1m দৈর্ঘ্য ও 1m² প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফলবিশিষ্ট রুপার তারের রোধ হবে 1.6×10−8Ωmডান পাশের সারণিতে কিছু সাধারণ পদার্থের রোধকত্ব দেখানো হয়েছে।

সারণি ১১.২: বিভিন্ন পদার্থের রোধকত্ব
পদার্থ
রোধকত্ব (http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%20%5COmega%20m)
রুপা
1.6x10-8
তামা
1.7x10-8
টাংস্টেন
5.5x10-8
নাইক্রোম
100x10-8

উপরের সারণি থেকে আমরা দেখতে পাই, যে সকল পদার্থের রোধকত্ব কম সেগুলো তড়িতের জন্য সুপরিবাহক হিসেবে কাজ করে। যেমন, তামা নাইক্রোমের তুলনায় তড়িৎ সুপরিবাহী। এ কারণেই বৈদ্যুতিক বর্তনীতে সংযোগ তার হিসেবে তামার ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে।
এছাড়া যে সকল পদার্থের রোধকত্বের মান তূলনামূলকভাবে বেশি তাদেরও বহুবিধ ব্যবহার রয়েছে। উদাহরণ হিসেবে নাইক্রোম তারের কথাই ধরা যাক। নাইক্রোমের রোধকত্ব এবং গলনাঙ্ক তামার তুলনায় অনেক বেশি। উচ্চ রোধকত্বের কারণেই নাইক্রোম তারের মধ্য দিয়ে তড়িৎ প্রবাহিত হলে প্রচুর তাপ উৎপন্ন হয়। নাইক্রোমের এ ধর্মের কারণেই বৈদ্যুতিক কেটলীতে পানি খুব দ্রুত গরম হয়। আমরা বাড়িতে যে সকল বৈদ্যুতিক বাল্ব ব্যবহার করি তাদের ফিলামেন্ট টাংস্টেন দ্বারা তৈরি হয়। টাংস্টেনের উচ্চ রোধকত্ব ও গলনাঙ্কের কারণে এটি বৈদ্যুতিক শক্তিকে খুব সহজে আলোকশক্তিতে রূপান্তরিত করতে পারে।
পরিবাহকত্ব
রোধের বিপরীত রাশি হলো পরিবাহিতা, তেমনি আপেক্ষিক রোধের বিপরীত রাশিকে পরিবাহকত্ব বলে। পরিবাহকত্বকে http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%20%5Csigmaঅক্ষর দ্বারা প্রকাশ করা হয়। এর মান পরিবাহীর উপাদান ও তাপমাত্রার উপর নির্ভরশীল। মনে করি, একটি পরিবাহীর উপাদানের আপেক্ষিক রোধ = http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%20%5Crhoসুতরাং, ঐ পরিবাহীর উপাদানের পরিবাহকত্ব http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%20%5Csigmaহবে- http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%20%5Csigma%20%5Cfrac%20%7B1%7D%20%7B%5Crho%7D
যেহেতু http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%20%5Crho-এর একক http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%20%5COmega%20mসুতরাং http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%20%5Csigma-এর একক হলো (http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%20%5COmega%20m)-1 গাণিতিক উদাহরণ ১১.৪। একটি বৈদ্যুতিক হিটারে ব্যবহৃত নাইক্রোম তারের আপেক্ষিক রোধ http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%20100%20%5Ctimes%2010%5E%7B-8%7D%20%5COmega%20m 15m লম্বা এবং 2×10-7প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফলবিশিষ্ট তারের রোধ কত হবে ?
আমরা জানি,
http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%20R=%20%5Crho%20%5Cfrac%20%7BL%7D%20%7BA%7D
http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%20=%20%5Cfrac%20%7B%28100%20%5Ctimes%2010%5E%7B-8%7D%20%5COmega%20m%29%2815m%29%7D%20%7B2.0%20%5Ctimes%2010%5E%7B-7%7D%20m%5E2%7D
http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%20=75%20%5COmega
উত্তর : রোধ http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%20=75%20%5COmega
এখানে,
আপেক্ষিক রোধ, http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%20%5Crho%20=%20100%20%5Ctimes%2010%5E%7B-8%7D%20%5COmega%20m
তারের প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফল, http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%20A=%202.0%20%5Ctimes%2010%5E%7B-7%7D%20m%5E2
তারের দৈর্ঘ্য, L= 15m
রোধ, R = ?
১১.১০। শ্রেণি এবং সমান্তরাল বর্তনী তৈরি ও ব্যবহার
Making series and parallel circuits and their uses
Podarthobilggan- 11.9.jpg
শ্রেণি বর্তনী
যে বর্তনীতে তড়িৎ উপকরণগুলো পর পর সাজানো থাকে তাকে শ্রেণি বর্তনী বলে। ১১.৯ চিত্রে কোষ E, দুটি বাল্ব B1, B2 পর পর সাজিয়ে শ্রেণি বর্তনী তৈরি করা হয়েছে। যেহেতু এই বর্তনীতে একটি মাত্র পথ রয়েছে, তাই এর সর্বত্র একই প্রবাহ চলবে। এখন যদি একটি অ্যামিটারকে A, B, বা C বিন্দুতেও সংযোগ দেওয়া যায় তাহলেও তড়িৎ প্রবাহের একই মান পাওয়া যাবে।
বিয়ে বাড়িতে বা বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আলোকসজ্জায় যে সকল ছোট ছোট বাতি ব্যবহার করা হয় এগুলো শ্রেণিবদ্ধভাবে সংযুক্ত করা হয়। আমরা টর্চ লাইটে একাধিক ব্যাটারিকে শ্রেণিতে সংযুক্ত করে ভোল্টেজ বৃদ্ধি করে থাকি। তড়িৎ প্রবাহ পরিমাপের জন্য অ্যামিটারকে বর্তনীতে শ্রেণিতে যুক্ত করা হয়।
সমান্তরাল বর্তনী
যে বর্তনীতে তড়িৎ উপকরণগুলো এমনভাবে সাজানো থাকে যে প্রত্যেকটির এক প্রান্তগুলো একটি সাধারণ বিন্দুতে এবং অপরপ্রান্তগুলো অন্য একটি সাধারণ বিন্দুতে সংযুক্ত থাকে তবে তাকে সমান্তরাল বর্তনী বলে। ১১.১০ চিত্রে বাল্ব B1 B2 এর একপ্রান্ত a বিন্দুতে এবং অপর প্রান্ত b বিন্দুতে সংযুক্ত থাকায় এগুলো একটি সমান্তরাল বর্তনী তৈরি করে। সমান্তরাল বর্তনীতে একাধিক পথ থাকায় প্রত্যেক পথ দিয়ে তড়িৎ প্রবাহ চলে।
Podarthobilggan- 11.10.jpg
ধরা যাক বর্তনীর মোট প্রবাহ Iএই প্রবাহ a বিন্দুতে এসে দুটি ভাগে বিভক্ত হয়। তড়িৎ প্রবাহের একটি অংশ http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?I1 যায় প্রথম বাল্ব B1 দিয়ে এবং বাকী অংশ http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?I2 যায় দ্বিতীয় বাল্ব B2 দিয়ে। b বিন্দুতে এসে প্রবাহ দুটি একত্রিত হয়ে পুনরায় http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?Iপ্রবাহ গঠন করে। P, Q এবং R বিন্দুতে অ্যামিটার -এর সাহায্যে তড়িৎ প্রবাহ পরিমাপ করলে দেখা যাবে,
http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?I= http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?I1 + http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?I2
এখানে বর্তনীর মূল তড়িৎপ্রবাহ =http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?I
অর্থাৎ, সমান্তরাল বর্তনীতে প্রত্যেক সমান্তরাল শাখায় প্রবাহিত স্বতন্ত্র তড়িৎ প্রবাহসমূহের যোগফল বর্তনীর মূল প্রবাহের সমান।
আমরা বাড়িতে বা অফিসে যে সকল বৈদ্যুতিক উপকরণ যেমন- বাতি, ফ্যান ইত্যাদি ব্যবহার করি এগুলো এসি মেইন লাইনের সাথে সমান্তরালভাবে সংযুক্ত করা হয়। সমান্তরালভাবে সংযোগের ফলে প্রত্যেকটি উপকরণ একই ভোল্টেজ সরবরাহ পায়। কিন্তু উপকরণগুলো ভিন্ন ভিন্ন প্রবাহ গ্রহণ করে।
১১.১১। তুল্যরোধ এবং বর্তনীতে তুল্যরোধের ব্যবহার
Equivalent resistance and its uses in circuit
অনেক সময় বিভিন্ন প্রয়োজনে একাধিক রোধকে একত্রে ব্যবহার করতে হয়। একাধিক রোধকে একত্রে সংযোগ করাকেই রোধের সন্নিবেশ বলে।
তুল্যরোধ: রোধের কোনো সন্নিবেশের পরিবর্তে যে একটি মাত্র রোধ ব্যবহার করলে বর্তনীর প্রবাহমাত্রা ও বিভব পার্থক্যের কোনো পরিবর্তন হয় না, তাকে ঐ সন্নিবেশের তুল্য রোধ বলে।
রোধের সন্নিবেশ দুধরনের হতে পারে, যথা- শ্রেণি সন্নিবেশ ও সমান্তরাল সন্নিবেশ।
রোধের শ্রেণি সন্নিবেশ
চিত্রে রোধক R1, R2 এবং R3 শ্রেণিবদ্ধভাবে সংযুক্ত আছে। রোধগুলো পর্যায়ক্রমে একটির পর অন্যটি সংযুক্ত করা হয়েছে। এক্ষেত্রে প্রত্যেকটি রোধের মধ্য দিয়ে একই মানের তড়িৎ প্রবাহ ও প্রবাহিত হচ্ছে। এখন আমরা শ্রেণি সন্নিবেশে সংযুক্ত এই তিনটি রোধের তুল্য রোধ নির্ণয় করবো।<br
Podarthobilggan- 11.11.jpg
'মের সূত্র থেকে আমরা জানি,
R1
রোধের দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্য, V1= IR1
R2
রোধের দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্য, V2= IR2
R3
রোধের দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্য, V3= IR3
সবগুলো রোধের দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্য অর্থাৎ সন্নিবেশের দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্য V হলে
http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%20%5CthereforeV= V1+ V2+ V3
= IR1+ IR2+ IR3
= I(R1+ R2+ R3) .... .... .... .... .... (11.5)
এখন R1, R2 R3 মানের রোধ তিনটিকে যদি RS মানের এমন একটি রোধ দ্বারা প্রতিস্থাপন করা হয় যে, এতে বর্তনীতে একই প্রবাহ I চলে এবং রোধগুলোর দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্য V অপরিবর্তিত থাকে তাহলে RS ই হবে এই সন্নিবেশের তুল্য রোধ।
তুল্যরোধের ক্ষেত্রে V = IRS .... .... .... .... .... (11.6)
সমীকরণ তুলনা করে পাই,
IRS = I(R1+ R2+ R3)
RS = R1+ R2+ R3
তিনটি রোধের পরিবর্তে যদি n সংখ্যক রোধ শ্রেণি সন্নিবেশে যুক্ত থাকে, তা হলে তুল্য রোধ RS হবে
RS= R1+ R2+ R3+ ...........+Rn
অর্থাৎ শ্রেণি সন্নিবেশে সংযুক্ত রোধগুলোর তুল্যরোধের মান সন্নিবেশে অন্তর্ভূক্ত বিভিন্ন রোধের মানের যোগফলের সমান। শ্রেণি সন্নিবেশে তুল্যরোধের মান আলাদা আলাদা প্রত্যেকটি রোধের মানের চেয়ে বড়।
সমান্তরাল সন্নিবেশ: কতকগুলো রোধ যদি এমনভাবে সংযুক্ত করা হয় যে, সবকয়টি রোধের একপ্রান্ত একটি সাধারণ বিন্দু A-তে এবং অপর প্রান্তগুলো অন্য একটি সাধারণ বিন্দু B-তে সংযুক্ত থাকে এবং প্রত্যেকটি রোধের দুই প্রান্তে একই বিভব পার্থক্য বজায় থাকে, তবে রোধগুলোর এই সন্নিবেশকে সমান্তরাল সন্নিবেশ বলা হয়।
Podarthobilggan- 11.12.jpg
১১.১২ চিত্রে তিনটি রোধক R1, R2 R3 সমান্তরাল সন্নিবেশে সংযুক্ত করা হয়েছে। এক্ষেত্রে তিনটি রোধের দুই প্রান্তে একই বিভব পার্থক্য V বজায় আছে। রোধের মানের বিভিন্নতার জন্য তাদের প্রত্যেকের মধ্য দিয়ে আলাদা মানের তড়িৎ প্রবাহিত হচ্ছে। এক্ষেত্রে বর্তনীর মূল প্রবাহ I, A -সংযোগ বিন্দুতে এসে তিনটি ভাগে বিভক্ত হয় এবং পুনরায় B বিন্দুতে এসে মিলিত হয়। ধরা যাক, R1, R2 R3 রোধের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত তড়িৎ প্রবাহের মান যথাক্রমে I1, I2 I3সুতরাং সমান্তরাল পথগুলোর প্রবাহ I1, I2 I3 -এর যোগফল সংযোগ বিন্দু A-এর প্রবাহ I এর সমান। অর্থাৎ
http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%20%5CthereforeI= I1+ I2+ I3 .... .... .... .... .... (11.7)
এক্ষেত্রে, প্রত্যেকটি রোধের দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্য ঠ হওয়ায় ও'মের সূত্র প্রয়োগ করে আমরা পাই,
http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%20I_%7B1%7D=%20%5Cfrac%20%7BV%7D%20%7BR_1%7D, http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%20I_%7B2%7D=%20%5Cfrac%20%7BV%7D%20%7BR_2%7Dএবং http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%20I_%7B3%7D=%20%5Cfrac%20%7BV%7D%20%7BR_3%7D
(11.7) নং সমীকরণে I1, I2 এবং I3 -এর মান বসিয়ে পাই,
http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%20I=%20%5Cfrac%20%7BV%7D%20%7BR_1%7D+%20%5Cfrac%20%7BV%7D%20%7BR_2%7D+%20%5Cfrac%20%7BV%7D%20%7BR_3%7D

http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%20=V%20%28%20%5Cfrac%20%7B1%7D%20%7BR_1%7D+%20%5Cfrac%20%7B1%7D%20%7BR_2%7D+%20%5Cfrac%20%7B1%7D%20%7BR_3%7D%20%29.... .... .... .... .... (11.8)
এখন R1, R2 R3 মানের রোধ তিনটিকে যদি RP মানের এমন একটি রোধ দ্বারা প্রতিস্থাপন করা হয় যে, এতে বর্তনীতে একই প্রবাহ I চলে এবং রোধগুলোর দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্য V অপরিবর্তিত থাকে, তাহলে RP ই হবে ঐ সন্নিবেশের তুল্য রোধ।
http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%20%5Ctherefore%20I=%20%5Cfrac%20%7BV%7D%20%7BR_P%7D.... .... .... .... .... (11.9)
(11.8)
ও (11.9) সমীকরণ তুলনা করে পাওয়া যায়,
http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%20%5Cfrac%20%7BV%7D%20%7BR_P%7D=%20V%20%28%20%5Cfrac%20%7B1%7D%20%7BR_1%7D+%20%5Cfrac%20%7B1%7D%20%7BR_2%7D+%20%5Cfrac%20%7B1%7D%20%7BR_3%7D%20%29

http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%20%5Cfrac%20%7B1%7D%20%7BR_P%7D=%20%28%20%5Cfrac%20%7B1%7D%20%7BR_1%7D+%20%5Cfrac%20%7B1%7D%20%7BR_2%7D+%20%5Cfrac%20%7B1%7D%20%7BR_3%7D%20%29
তিনটি রোধের পরিবর্তে যদি n সংখ্যক রোধ সমান্তরাল সন্নিবেশে যুক্ত থাকে, তাহলে তুল্যরোধ RP কে নিম্নলিখিত ভাবে প্রকাশ করা যায়।
http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%20%5Cfrac%20%7B1%7D%20%7BR_P%7D=%20%5Cfrac%20%7B1%7D%20%7BR_1%7D+%20%5Cfrac%20%7B1%7D%20%7BR_2%7D+%20%5Cfrac%20%7B1%7D%20%7BR_3%7D%20+................+%20%5Cfrac%20%7B1%7D%20%7BR_n%7D
অর্থাৎ সমান্তরাল সন্নিবেশে সংযুক্ত প্রত্যেকটি রোধের বিপরীত রাশির সমষ্টি তুল্যরোধের বিপরীত রাশির সমান।
গাণিতিক উদাহরণ ১১.৬ : http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%205%20%5COmegaএবং http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%2010%20%5COmegaমানের দুটি রোধ আলাদাভাবে শ্রেণি এবং সমান্তরাল সন্নিবেশে সংযুক্ত করলে উভয় ক্ষেত্রে তুল্য রোধের মান নির্ণয় কর।
আমরা জানি,
RS= R1+ R2
=
http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%205%20%5COmega+ http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%2010%20%5COmega
=
http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%2015%20%5COmega
এখানে,
প্রথম রোধ, R1= http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%205%20%5COmega
দ্বিতীয় রোধ, R2= http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%2010%20%5COmega
শ্রেণি সমবায়ে তুল্য রোধ, RS = ?
সমান্তলাল সমবায়ে তুল্য রোধ, RP = ?
আবার,
http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%20%5Cfrac%20%7B1%7D%20%7BR_P%7D=%20%5Cfrac%20%7B1%7D%20%7BR_1%7D+%20%5Cfrac%20%7B1%7D%20%7BR_2%7D

http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%20%5Cfrac%20%7B1%7D%20%7BR_P%7D=%20%5Cfrac%20%7B1%7D%20%7B5%20%5COmega%7D+%20%5Cfrac%20%7B1%7D%20%7B10%20%5COmega%7D
http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%20%5Cfrac%20%7B2+1%7D%20%7B10%7D%20%5COmega%5E%7B1%7D

http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%20%5Cfrac%20%7B3%7D%20%7B10%7D%20%5COmega%5E%7B1%7D
RP=
http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%203.33%20%5COmega
RS=
http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%2015%20%5COmegaএবং RP= http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%203.33%20%5COmega
১১.১২ তড়িৎ ক্ষমতার হিসাব
Electric power
যখন কোনো পরিবাহীর দুই প্রান্তে বিভব পার্থক্য প্রয়োগ করা হয়, তখন ঐ পরিবাহীতে তড়িৎপ্রবাহের সৃষ্টি হয়। এর ফলে কাজ সম্পন্ন হয় এবং ইলেকট্রনগুলো শক্তি অর্জন করে। এই তড়িৎশক্তি বর্তনীর প্রকৃতি অনুযায়ী বিভিন্ন প্রকার শক্তিতে যেমন- তাপ, আলো, যান্ত্রিকশক্তি ইত্যাদিতে রূপান্তরিত হতে পারে।
Podarthobilggan- 11.13.jpg
ধরা যাক, AB, R রোধের একটি পরিবাহী এর মধ্য দিয়ে t সময়ে Q পরিমাণ আধান প্রবাহিত হয় এবং A B বিন্দুর বিভব পার্থক্য Vআমরা জানি যদি, কোনো পরিবাহির দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্য 1 ভোল্ট হয় এবং এর মধ্য দিয়ে 1 কুলম্ব আধান প্রবাহিত হয়, তখন কৃত কাজের পরিমাণ হয় তথা ব্যয়িত শক্তির পরিমাণ হয় 1 জুল। সুতরাং পরিবাহীর মধ্য দিয়ে Q কুলম্ব আধান পরিবাহিত হলে কৃত কাজ = VQ জুল।
সুতরাং, ব্যয়িত শক্তি তথা রূপান্তরিত মোট শক্তির পরিমাণ
W= VQ
আবার তড়িৎপ্রবাহ, http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%20I=%20%5Cfrac%20%7BQ%7D%20%7BT%7D
বা, Q= It
http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%20%5Ctherefore%20W=%20VIt........ ........ ........ (11.11)
মের সূত্র ব্যবহার করে এ সম্পর্ককে নিম্নোক্তভাবেও প্রকাশ করা যায়।
http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%20%5Ctherefore%20W=%20VIt=%20I%5E%7B2%7D%20Rt=%20%5Cfrac%20%7BV%5E2%7D%20%7BR%7D%20tজুল .... .... .... .... .... .... .... (11.12)
তড়িৎ ক্ষমতা
আমরা বাড়ি ও কল-কারখানায় যে সকল বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করি তাদের প্রত্যেকটির গায়ে সাধারণত কী পরিমাণ ভোল্টেজে এটি চলে তা এবং এর তড়িৎ ক্ষমতা ওয়াট লেখা থাকে। আমরা জানি কাজ সম্পাদনের হার তথা শক্তি রূপান্তরের হারকে ক্ষমতা বলে। সুতরাং, কোনো বৈদ্যুতিক যন্ত্রে তড়িৎশক্তি অন্যান্য শক্তিতে রূপান্তরিত হয়, তাই হলো এ যন্ত্রের ক্ষমতা P অর্থাৎ, ক্ষমতা = কৃত কাজসময় = রূপান্তরিত শক্তিসময়
http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%20%5Ctherefore%20P=%20%5Cfrac%20%7BW%7D%20%7Bt%7D.... .... .... .... .... .... .... (11.13)
সমীকরণ (11.11) থেকে W -এর মান বসিয়ে পাই,
P= VI .... .... .... .... .... .... .... .... (11.14)
মের সূত্র প্রয়োগ করে P কে V, I এবং R -এর সাহায্যে নিম্নক্তভাবে প্রকাশ করা যায়-
http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%20P=%20VI=%20I%5E%7B2%7D%20R=%20%5Cfrac%20%7BV%5E2%7D%20%7BR%7D.... .... .... .... .... .... .... (11.15)
আমরা জানি ক্ষমতার একক হল ওয়াট (W)তড়িৎ শক্তি হিসেবের সময় সাধারণত ওয়াটের পরিবর্তে KW, MW ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়। 1KW = 103W এবং 1MD = 106W
আমরা বাসাবাড়িতে যে সকল বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করি তার মধ্যে কয়েকটির ক্ষমতা উল্লেখ করা হলো।
বৈদ্যুতিক বাল্বের ক্ষমতা 40, 60, 100 W হয়ে থাকে। বৈদ্যুতিক পাখার ক্ষমতা সাধারণত 65-75 W হয়।
টেলিভিশনের ক্ষমতা সাধারণত ৬০-৭০ ড। আজকাল আমরা যে সকল এনার্জি সেভিং বাল্ব ব্যবহার করি এগুলোর ক্ষমতা সাধারণত 11-30 W হয়।
এছাড়াও আমরা বাসায় ফ্রিজ, হিটার, ইস্ত্রি, ব্যবহার করি এদের ক্ষমতা অনেক বেশি। তাই পিক আওয়ারে এসব যন্ত্রপাতি ব্যবহার না করা ভালো।
তড়িৎশক্তি ব্যয়ের হিসাব
আমরা বাসা-বাড়ি, দোকান, কল-কারখানায় যে তড়িৎ শক্তি ব্যবহার করি তার জন্য মূল্য পরিশোধ করতে হয়। তড়িৎ শক্তি ব্যবহার করে এমন প্রত্যেক বাড়িতে একটি বৈদ্যুতিক মিটার থাকে যা বাড়িতে ব্যয়িত তড়িৎ শক্তির হিসাব রাখে। বিশ্বব্যাপী তড়িৎ সরবরাহ প্রতিষ্ঠান কিলোওয়াট-ঘণ্টা (kWh) একককে ব্যয়িত তড়িৎশক্তির পরিমাণ নির্ধারণ করে। আমরা এই কিলোওয়াট-ঘন্টা একককে বোর্ড অব ট্রেড ইউনিট বা সংক্ষেপে ইউনিট বলে থাকি। বৈদ্যুতিক মিটারে দুই সময়ের রিডিং-এর পার্থক্য থেকে ঐ সময়ের ব্যবহৃত তড়িৎ-শক্তির পরিমাণ পাওয়া যায়।
যেহেতু ক্ষমতা P = কৃত কাজসময় = রূপান্তরিত শক্তিসময় , http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%20P%20=%20%5Cfrac%20%7BW%7D%20%7Bt%7D
http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%20%5Ctherefore%20W=%20Ptw
যদি P=1kW এবং t= 1h হয়, তখন W= kW × 1h = 1kWh হয়।
অর্থাৎ এক কিলোওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন কোনো তড়িৎ যন্ত্র এক ঘণ্টা ধরে কাজ করলে যে পরিমাণ তড়িৎশক্তিকে অন্য শক্তিতে রূপান্তর করে বা ব্যয় করে তাকে এক কিলোওয়াট-ঘণ্টা বা এক ইউনিট বলে।
নিজে কর : 1kWh কে জুলে প্রকাশ কর।
1kWh = 3.6 × 106J
ক্ষমতাকে ওয়াটে এবং সময়কে ঘণ্টায় প্রকাশ করলে, ব্যয়িত তড়িৎশক্তি W -কে লেখা যায়
W= Pt Wh
একে 1000 দিয়ে ভাগ করলে ব্যয়িত শক্তি kWh এ পাওয়া যাবে।
নিজে কর:
তুমি যে ঘরে বাস করো, সেই ঘরে যদি বৈদ্যুতিক সংযোগ থাকে, তাহলে ঐ ঘরে কী কী বৈদ্যুতিক উপকরণ আছে, তার একটি তালিকা তৈরি কর। এর থেকে ঐ ঘরের জন্য এক মাসের সম্ভাব্য ব্যয়িত শক্তির পরিমাণ নির্ণয় কর।
গাণিতিক উদাহরণ ১১.৭ : একটি বাল্বের গায়ে 100W- 220V লিখা আছে। এর ফিলামেন্টের রোধ কত ? এর মধ্যদিয়ে কী পরিমাণ তড়িৎ প্রবাহিত হবে ?
আমরা জানি,
http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%20P=%20%5Cfrac%20%7BV%5E2%7D%20%7BR%7D
R=V2P

http://www.forkosh.com/mathtex.cgi?%20=%20%5Cfrac%20%7B220V%20%5Ctimes%20220V%7D%20%7B100W%7D
=484Ω
এখানে
বিভব পার্থক্য, V = 220V
ক্ষমতা, P= 100W
রোধ, R= ?
তড়িৎ প্রবাহ, I= ?
আবার, P= VI
I=PV
=100W220V
= 0.455A
উ:484Ω এবং 0.455A
১১.১৩ তড়িতের সিস্টেম লস এবং লোড শেডিং
System loss and load sheding
আমরা জানি, দেশের বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত বিদ্যুৎ পাওয়ার প্লান্টগুলোতে বিদ্যুৎ শক্তি উৎপাদিত হয়। উৎপন্ন এই বিদ্যুৎকে প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্নস্থানে সঞ্চালন করতে হয়। বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থার মাধ্যমে উৎপাদিত বিদ্যুৎ শক্তিকে বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত বিদ্যুৎ সাবস্টেশনে স্থানান্তর করা হয়। এর পর বিভিন্ন সাবস্টেশন থেকে পুনরায় বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার মাধ্যমে বিদ্যুৎ শক্তিকে গ্রাহক পর্যায়ে বিতরণ করা হয়।
বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিদ্যুৎ শক্তি নিম্ন ভোল্টেজে উৎপাদন করা হয়। পরে এই ভোল্টেজকে স্টেপ আপ ট্রান্সফর্মার -এর সাহায্যে উচ্চ ভোল্টেজে রূপান্তরিত করা হয়। বিদ্যুৎ সঞ্চালনের জন্য যে সকল পরিবাহী তার ব্যবহার করা হয় তাদের একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ রোধ থাকে। ফলে এই রোধকে অতিক্রমের জন্য তড়িৎশক্তির একটি অংশ তাপে রূপান্তরিত হয়। অর্থাৎ শক্তির লস বা ক্ষয় হয়। এই লসই হলো তড়িতের সিস্টেম লস। উচ্চ ভোল্টেজে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের ফলে বিদ্যুৎ গ্রিড তথা পরিবাহীর রোধের কারণে যে লস হয় তা অনেকাংশে কমে যায়। একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ বিদ্যুৎশক্তির জন্য,
উচ্চ ভোল্টেজে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের ফলে তড়িৎ প্রবাহের মান কম হয়। এর ফলে রোধজনিত লসের পরিমাণও কমে যায়। উদাহারণ হিসাবে বলা যায়- যদি সঞ্চালন লাইন ভোল্টেজকে দশ গুণ বৃদ্ধি করা হয়, তখন তড়িৎ প্রবাহের মান এক দশমাংশ হয়। যার ফলে বিদ্যুৎ গ্রিডের I²R লসের পরিমাণ একশত ভাগের এক ভাগ হয়। অর্থাৎ সঞ্চালন লাইনের ভোল্টেজকে বৃদ্ধি করে সিস্টেম লস কমানো যেতে পারে।
লোড শেডিং
প্রত্যেকটি বিদ্যুৎকেন্দ্র একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ বিদ্যুৎশক্তি উৎপাদন করে। সবগুলো বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যোগ হয়। বিভিন্ন এলাকার চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র জাতীয় গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ সংগ্রহ করে। পরবর্তীতে বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র গ্রাহক পর্যায়ে এ বিদ্যুৎকে পৌঁছে দেয় বা বিতরণ করে। কোনো নির্দিষ্ট এলাকার বিদ্যুতের চাহিদা উৎপাদন বা সরবরাহের তুলনায় বেশি হলে তখন বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রের পক্ষে চাহিদা মেটানো সম্ভব হয়ে উঠে না। তখন বাধ্য হয়ে উপকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ বিতরণ ব্যবস্থার নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় কিছু সময়ের জন্য বিদ্যুৎ বিতরণ বন্ধ করে দেয় বা বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে। একে লোড শেডিং বলে। আবার উপকেন্দ্র যখন প্রয়োজনীয় চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ পায় তখন পুনরায় ঐ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করে।
যদি লোড শেডিং এক নাগাড়ে কয়েক ঘন্টা স্থায়ী হয় তখন গ্রাহক পর্যায়ে লোডশেডিংকে সহনীয় করতে কর্তৃপক্ষ চক্রাকারে বিভিন্ন এলাকায় লোড শেডিং করে থাকে।
১১.১৪ তড়িতের নিরাপদ ও কার্যকর ব্যবহার
Safe and effective use of electricity
তড়িতের বিপজ্জনক দিকসমূহ: তড়িৎ আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অত্যন্ত গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তড়িৎ আমাদের যেমন অনেক উপকারে আসে তেমনি এর অসতর্ক ব্যবহার অত্যন্ত বিপজ্জনক হতে পারে। বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি এবং বর্তনীতে যে কোনো ধরনের ত্রুটি বৈদ্যুতিক শক্্ দিতে পারে এবং অগ্নিকাণ্ড ঘটতে পারে। শরীরের মধ্য দিয়ে বিদ্যুৎ প্রবাহের ফলে মানুষের মৃত্যুরও ঝুঁকি রয়েছে। তড়িৎশক্তির ব্যবহার নিম্নবর্ণিত তিনটি কারণে বিপজ্জনক হতে পারে।
  • ১. অন্তরকের ক্ষতিসাধন;
  • ২. ক্যাবলের অতি উত্তপ্ত হওয়া;
  • ৩. আর্দ্র অবস্থা।
১.অন্তরকের ক্ষতিসাধন : বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতিকে কাজ করতে হলে তাদেরকে ভোল্টেজ উৎস-এর সাথে দুটি পরিবাহী তার দ্বারা সংযুক্ত করে বর্তনী সম্পূর্ণ করতে হয়। এই দুটি তারকে আমরা বলি জীবন্ত (Live) এবং নিরপেক্ষ (Neutral) তার। এ সকল পরিবাহী তার সাধারণত রাবার দ্বারা অন্তরিত অবস্থায় থাকে। দুটি তারকে পরে একত্রিত অবস্থায় পিভিসি বা রাবার দ্বারা আবৃত করে ক্যাবল তৈরি করা হয়।
সময় এবং ব্যবহার এর সাথে সাথে এ সকল অন্তরক পদার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যেমন আমরা বাড়িতে যে বৈদ্যুতিক ইস্ত্রি ব্যবহার করি এর ক্যাবল ব্যবহারের সময় বেঁকে যায় এবং মোচড় খায়। এতে করে অভ্যন্তরস্থ অন্তরক ব্যবস্থা ফেটে এবং ভেঙে যেতে পারে। ফলে পরিবাহী তার উন্মুক্ত হয়ে যায়। এখন কোনোভাবে যদি জীবন্ত তার শরীরের সংস্পর্শে আসে, তখন মারাত্মক বৈদ্যুতিক শক্ দ্বারা আক্রান্ত হতে হয়। এছাড়া অন্তরক ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ফলে জীবন্ত তার এবং নিরপেক্ষ তার পরষ্পরের সংস্পর্শে আসলে শর্ট সার্কিটের সৃষ্টি হবে এবং অগ্নিকাণ্ড ঘটতে পারে।
২. ক্যাবলের অতি উত্তপ্ত হওয়া: যখন অস্বাভাবিকভাবে বেশি পরিমাণ তড়িৎপ্রবাহ বৈদ্যুতিক ক্যাবল বা পরিবাহী তার দিয়ে যায় তখন এটি উত্তপ্ত হয়। যেমন -যখন বৈদ্যুতিক পাখার মোটর অতি উত্তপ্ত হয় এবং গলে যায়, ফলশ্রুতিতে জীবন্ত তার এবং নিরপেক্ষ তার একত্রিত হয়ে যায় এবং অস্বাভাবিকভাবে উচ্চমানের তড়িৎ প্রবাহিত হয়। এছাড়া অনেক সময় আমরা সকেটে মাল্টিপ্লাগ ব্যবহার করে অনেকগুলো বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতিকে একসঙ্গে সংযোগ দেই। এর ফলে সকেটের অভ্যন্তরস্থ পরিবাহী তার মেইন লাইন থেকে যে পরিমাণ তড়িৎ গ্রহণ করে তা এই পরিবাহী তার নিরাপদে যে পরিমাণ তড়িৎ প্রবাহ গ্রহণ করতে পারে তার চেয়ে অনেক বেশি হয়। এর ফলে ক্যাবল তার অত্যধিক উত্তপ্ত হয়ে ওঠে, অন্তরক ব্যবস্থা গলে যায় এবং অগ্নিকাণ্ড ঘটায়।
Podarthobilggan- 11.14.jpg
৩. আর্দ্র অবস্থা: আর্দ্র অবস্থায় অনেক বৈদ্যুতিক দূর্ঘটনা ঘটে থাকে। আমরা জানি, পানির মধ্য দিয়ে তড়িৎ প্রবাহিত হতে পারে। এ কারণে কোনো বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের যে সকল অংশ অন্তরিত অবস্থায় থাকে না সেগুলো সবসময় শুষ্ক রাখতে হবে। অন্যথায় বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট এবং শক্ দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকবে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, কোনো হেয়ার ড্রায়ারকে ভেজা সিঙ্কে রেখে দেওয়া অত্যন্ত বিপজ্জনক। যদি হেয়ার ড্রায়ারের তার উন্মুক্ত থাকে কিংবা তারের অন্তরক ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যায়, তখন যিনি সিঙ্ক ব্যবহার করছেন তিনি বৈদ্যুতিক শক্ দ্বারা আক্রান্ত হতে পারেন। এছাড়াও ভেজা হাত দ্বারা কোনো বৈদ্যুতিক সুইচ অন্ বা অফ্ করাও বিপজ্জনক।
তড়িতের নিরাপদ ব্যবহার
পূর্ববর্তী অনুচ্ছেদে তোমরা তড়িৎ ব্যবহারের বিপজ্জনক দিক সম্পর্কে অবহিত হয়েছ। বর্তমান অনুচ্ছেদে আমরা বাড়িতে কিভাবে তড়িতের নিরাপদ ব্যবহার সম্পর্কে জানব।
বাড়িতে তড়িৎ ব্যবহারের সময় যে সকল নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন এগুলো হলো:
  • ১. সার্কিট ব্রেকার
  • ২. ফিউজ
  • ৩. সুইচের সঠিক সংযোগ
  • ৪. ভূ-সংযোগ তার
১. সার্কিট ব্রেকার: নিরাপত্তামূলক কৌশল হিসাবে সার্কিট ব্রেকার ব্যবহার করা হয়। এটি সাধারণত বাড়ির সন্মুখ দরজার আশেপাশে স্থাপন করা হয়। যখন কোনো বর্তনীতে নির্দিষ্ট মানের অধিক তড়িৎ প্রবাহিত হয় তখন সার্কিট ব্রেকার বর্তনীর তড়িৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। সার্কিট ব্রেকার বাড়ির কোনো নির্দিষ্ট অংশের তড়িৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন করে। বর্তনীতে সার্কিট ব্রেকার না থাকলে অতিরিক্ত তড়িৎ প্রবাহের জন্য বাড়ির তড়িৎ সরঞ্জাম বিনষ্ট হয়ে যেতে পারে, এমনকি অগ্নিকাণ্ডও ঘটতে পারে।
২. ফিউজ: ফিউজ হলো একটি নিরাপত্তামূলক কৌশল। বৈদ্যুতিক বর্তনীতে অধিক তড়িৎপ্রবাহ প্রতিরোধের জন্য ফিউজ অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ফিউজটিকে সবসময় বৈদ্যুতিক ক্যাবলের জীবন্ত তারে সংযোগ দেওয়া হয়। একটি স্বল্প দৈর্ঘ্যরে চিকন তার ফিউজ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। নির্দিষ্ট মানের তড়িৎপ্রবাহ অপেক্ষা বেশি তড়িৎ প্রবাহিত হলে ফিউজটি উত্তপ্ত হয় এবং গলে যায়। এতে বর্তনী বিচ্ছিন্ন হয় এবং বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি নষ্ট হওয়ার হাত থেকে রক্ষা পায়। ফিউজের গায়ে নির্দিষ্ট মানের তড়িৎপ্রবাহের উল্লেখ থাকে। কোনো বৈদ্যুতিক যন্ত্র বা সরঞ্জাম সর্বোচ্চ যে মানের তড়িৎপ্রবাহ বহন করতে পারে তার চেয়ে সামান্য বেশি তড়িৎপ্রবাহ বহনে সক্ষম এমন ফিউজ ব্যবহার করতে হবে। এতে করে ফিউজ পুড়ে গেলেও বৈদ্যুতিক সরঞ্জামটি তড়িতায়িত থাকবে না। এছাড়াও ফিউজ পরিবর্তনের সময় বিদ্যুৎ সরবরাহের মেইন সুইচ্ বন্ধ করতে হবে।
৩. সুইচের সঠিক সংযোগ: সুইচের কাজ হলো কোনো বৈদ্যুতিক বর্তনীকে সম্পূর্ণ করা অথবা বর্তনীকে বিচ্ছিন্ন করা। বর্তনীতে সুইচ লাগানোর সময় খেয়াল রাখতে হবে, এটি যেন জীবন্ত তারে সংযোগ দেওয়া হয়। এতে করে সুইচ বন্ধ করা মাত্র উচ্চ বিভব উৎস থেকে বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম বিচ্ছিন্ন হবে [চিত্র ১১.১৫]। সুইচটিকে যদি ভুলবশত নিরপেক্ষ তারে সংযোগ দেওয়া হয়, তখন সুইচ বন্ধ করার পরও বৈদ্যুতিক সরঞ্জামটি জীবন্ত থাকবে [চিত্র ১১.১৬] এবং বৈদ্যুতিক শক্রে ঝুঁকি বাড়বে।
Podarthobilggan- 11.15,16.jpg
৩. ভূসংযোগ তার: সকল বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম বা উপকরণের বৈদ্যুতিক বর্তনী সম্পূর্ণ করার জন্য কমপক্ষে দুটি তারের দরকার। এগুলো হলো জীবন্ত (L) ও নিরপেক্ষ (N) তার। জীবন্ত তার বৈদ্যুতিক সরঞ্জামে বৈদ্যুতিক শক্তি সরবরাহ করে। অপরদিকে নিরপেক্ষ তারের মাধ্যমে তড়িৎপ্রবাহ উৎসে ফিরে আসে এবং বর্তনী সম্পূর্ণ করে। নিরপেক্ষ তারের বিভব শূন্য। ভূসংযোগ তার হলো নি¤œরোধের তার। এটি সাধারণত বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের ধাতব ঢাকনার (Casing) সাথে সংযুক্ত থাকে। বিভিন্ন কারণে বর্তনী ত্রুটিযুক্ত থাকতে পারে। যেমন- যদি জীবন্ত তার সঠিকভাবে সংযুক্ত না থাকে এবং তা যদি বৈদ্যুতিক যন্ত্রের ধাতব ঢাকনাকে স্পর্শ করে তবে ব্যবহারকারী বৈদ্যুতিক শক্ দ্বারা আক্রান্ত হতে পারেন। ধাতব ঢাকনাটি ভূসংযুক্ত অবস্থায় থাকলে এমনটি ঘটবে না। এক্ষেত্রে জীবন্ত তার থেকে উচ্চমানের তড়িৎপ্রবাহ ধাতব ঢাকনা হয়ে ভূসংযোগ তার দিয়ে মাটিতে চলে যাবে। ফলে ফিউজটি পুড়ে যাবে এবং তড়িৎযন্ত্রের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাবে। বাড়িতে ব্যবহৃত ফ্রিজের নিরাপদ ব্যবহারের জন্য অবশ্যই ভূসংযোগ বা আর্থিং দেওয়া উচিৎ। ১১.১৭ চিত্রে ভূসংযোগ তারবিহীন ওয়াশিং মেশিন কীভাবে বিপজ্জনক হতে পারে তা তুলে ধরা হয়েছে। ১১.১৮ চিত্রে ভূসংযোগতার কীভাবে নিরপত্তামূলক সতর্কতা হিসেবে কাজ করে তা দেখানো হয়েছে।
Podarthobilggan- 11.18.jpg
Podarthobilggan- 11.21.jpg
এ ছাড়াও আজকাল বিভিন্ন বহনযোগ্য যন্ত্রপাতিতে থ্রি পিন প্লাগ ব্যবহার করা হয়। এগুলোতে নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা হিসেবে ফিউজ সংযুক্ত থাকে। ফিউজটি তড়িৎ যন্ত্রটিকে নিরাপদ রাখে।
অনুসন্ধান- ১১.১
বাসা বাড়ি উপযোগী তড়িৎ বর্তনী নকশা প্রণয়ন এবং ব্যবহার প্রদর্শন।
উদ্দেশ্য:
শিক্ষার্থীরা বাসা বাড়িতে ব্যবহার উপযোগী তড়িৎ বর্তনীর নকশা প্রণয়ন করে এর বিভিন্ন অংশে এসি উৎসের ব্যবহার প্রদর্শন করতে পারবে।
কাজের ধারা :
  • ১. কাজের শুরুতেই বৈদ্যুতিক কেবলের জীবন্ত (L)এবং নিরপেক্ষ (N) তার অঙ্কন কর।
  • ২. এবার এ দুটি তারকে প্রধান ফিউজ বাক্স, বৈদ্যুতিক মিটার এবং ডিস্ট্রিবিউশন বাক্সের সঙ্গে পরপর সংযোগ
দাও।
  • ৩. ডিস্ট্রিবিউশন বাক্সে মেইন সুইচ অঙ্কন কর।
  • ৪. ডিস্ট্রিবিউশন বাক্সে দুইটি ফিউজ অংকন কর। ফিউজগুলোকে অবশ্যই L তারে সংযোগ দিতে হবে।
  • ৫. এবার একটি ফিউজ-এর সঙ্গে দুইটি বাতি, একটি ফ্যান সমান্তরালভাবে সংযোগ দিয়ে বর্তনী সম্পূর্ণ কর।
প্রত্যেক বাতি ও ফ্যানের জন্য L তারে আলাদা সুইচ অঙ্কন কর।
  • ৬. অন্য ফিউজটি ব্যবহার করে টেলিভিশন সেট, ইস্ত্রি ইত্যাদির জন্য আলাদা আলাদা পাওয়ার সকেটে সংযোগ
দাও।

নিজে কর:
তড়িৎ শক্তির অপচয় রোধ ও সংরক্ষণে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য পোস্টার অঙ্কন।
  • ১. দোকান থেকে পোস্টার তৈরির জন্য পোস্টার পেপার সংগ্রহ কর।
  • ২. বিভিন্ন রঙের কলম ব্যবহার করে তড়িৎ শক্তির অপচয় রোধ ও সংরক্ষণে কী কী ব্যাবস্থা
গ্রহণ করা উচিৎ তা পোস্টারে লিখ।
  • ৩.শিক্ষক সেরা পোস্টারটি নির্বাচন করবেন এবং পুরস্কারের ব্যাবস্থা করবেন

No comments:

Post a Comment