Wednesday, April 26, 2017

If you want to operate facebook,So click here::https://web.facebook.com/?_rdr

Thursday, February 16, 2017

Sagar profile: ggggggggggggggggggggg

Sagar profile: ggggggggggggggggggggg: বস্তুর উপর তাপের প্রভাব   Share   সূচিপত্র ভৌত রাশি ও পরিমাপ গতি বল কাজ, ক্ষমতা ও শক্তি পদার্থের অবস্থা ও চাপ বস্তুর...

Wednesday, February 1, 2017

কাজ, ক্ষমতা ও শক্তি


কাজ, ক্ষমতা ও শক্তি
 Share
সূচিপত্র

ভৌত রাশি ও পরিমাপ
গতি
বল
কাজ, ক্ষমতা ও শক্তি
পদার্থের অবস্থা ও চাপ
বস্তুর উপর তাপের প্রভাব
তরঙ্গ ও শব্দ
আলোর প্রতিফলন
আলোর প্রতিসরণ
দশম অধ্যায় স্থিরতড়িৎ
একাদশ অধ্যায় চল তড়িৎ
তড়িতের চৌম্বক ক্রিয়া
আধুনিক পদার্থবিজ্ঞান ও ইলেকট্রনিক্স
জীবন বাঁচাতে পদার্থবিজ্ঞান
সূত্রাবলি


[আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে কোনো কিছু করাকে কাজ বলা হলেও পদার্থবিজ্ঞানে কাজ দ্বারা একটি সুনির্দিষ্ট ধারণাকে বুঝায়। এই অধ্যায়ের শুরুতে আমরা সেই ধারণাকে উপস্থাপিত করব। বিজ্ঞানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে শক্তি। আমরা আমাদের অভিজ্ঞতা থেকে দেখি শক্তি ছাড়া জগৎ অচল। বিভিন্নরূপে আমরা শক্তি পাই। গতিশীল বস্তুর জন্য গতিশক্তি, ভূপৃষ্ঠের খানিক উপরে বস্তুর অবস্থানের জন্য বিভব শক্তি, একটি সংকোচিত বা প্রসারিত স্প্রিং এর শক্তি, গরম বস্তুর তাপ শক্তি, আহিত বস্তুর তড়িৎ শক্তি ইত্যাদি। শক্তি ক্রমাগত এক রূপ থেকে অন্য রূপে রূপান্তরিত হচ্ছে, যদিও মহাবিশ্বের মোট শক্তির পরিমাণ অপরিবর্তনীয় এবং সুনির্দিষ্ট। এই অধ্যায়ে আমরা শক্তির রূপান্তরের ঘটনা এবং বিজ্ঞানের গুরুত্বপূর্ণ নীতিগুলোর একটি শক্তির সংরক্ষণশীলতার নীতি নিয়ে আলোচনা করব।]

৪.১ কাজ
WorkEdit
দৈনন্দিন জীবনে কোনো কিছু করাকে কাজ বললেও বিজ্ঞানে কিন্তু কোনো কিছু করা হলেই কাজ হয় না। বিজ্ঞানে কাজ একটি বিশেষ অর্থ বহন করে। একজন দারোয়ান সারাক্ষণ বসে বসে একটি বাসা পাহারা দিলেন। তিনি বলবেন তিনি তার কাজ করেছেন। কোনো স্রোতের নদী বা খালে একটি নৌকা ভেসে যাচ্ছিল, করিম সাহেব সেটাকে টেনে ধরে রাখছেন। তিনি বলবেন তিনি কাজ করে নৌকাটিকে ঠেকিয়ে রেখেছেন নতুবা সেটি স্রোতের টানে কোথায় ভেসে যেত। দৈনন্দিন জীবনে এগুলোকে কাজের স্বীকৃতি দিলেও বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে কিন্তু এগুলো কাজ হয়নি। বরং দারোয়ান বসে বসে পাহারা না দিয়ে যদি হেঁটে হেঁটে পাহারা দিতেন কিংবা নৌকাটি যদি স্রোতের টানে ভেসে যেত তাহলে কিছু কাজ হতো। বিজ্ঞানে কাজের অর্থ দৈনন্দিন জীবনে কাজের অর্থের চেয়ে ভিন্নতর। আসলে বিজ্ঞানে কাজ হতে গেলে বল ও তার সাথে সরণ সংশ্লিষ্ট থাকতে হয়। কোনো বস্তুর উপর কোনো বল ক্রিয়া করে যদি বস্তুটির কিছু সরণ ঘটায় তাহলে কেবল কাজ হয়। আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে আমাদের চারপাশে কাজের অনেক উদাহরণ দেখতে পাই। বলদ মাঠে লাঙল টানছে, একজন শ্রমিক ঠেলা গাড়ি ঠেলছেন, ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় কেউ লৌহ গোলক নিক্ষেপ করছে ইত্যাদি।
নিচের উদাহরণগুলো বিবেচনা করা যাক:

(ক) রতন এক প্যাকেট বই হাত দিয়ে ধরে দাঁড়িয়ে আছে।
(খ) মিতা পদার্থবিজ্ঞান বইখানাকে ঠেলে টেবিলের উপর দিয়ে এক প্রান্তথেকে অন্য প্রান্তেনিয়ে যচ্ছে।
(গ) নীরুএকটি ভারী ব্যাগকে সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠাচ্ছে।
(ঘ) রিমি জোরে দেয়ালকে ঠেলছে।
যেহেতু একটি বল দ্বারা কোনো বস্তু গতিশীল হলেই কেবল কাজ হয়, সুতরাং উল্লিখিত উদাহরণগুলোতে (খ) এবং (গ)-এর ক্ষেত্রে কাজ হয়েছে; কিন্তু (ক) এবং (ঘ) এর ক্ষেত্রে কোনো কাজ হয়নি। আমরা কোনো বস্তুকে উপরে উঠাতে বা নিচে নামাতে বা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নিতে বল প্রয়োগ করতে পারি। আমরা বল প্রয়োগ করে কোনো বস্তুর আকার পরিবর্তন করতে পারি। এ সকল ক্ষেত্রে কাজ হয়।
যদি একজন নির্মাণ শ্রমিক দশখানা ইট নিয়েকোনো ভবনের দোতলায় উঠেন, তবে তিনি একখানা ইট নিয়ে ঐ দোতলায় উঠলে যে কাজ করতেন তার চেয়ে বেশি কাজ করবেন, কেননা তাকে বেশি বল প্রয়োগ করতে হয়। তাকে আরো বেশি কাজ করতে হবে যদি তিনি ঐ দশখানা ইটই তিনতলায় উঠান। সুতরাং কাজের পরিমাণ নির্ভর করে প্রযুক্ত বলের উপর এবং দূরত্বের উপর। কোনো বস্তুর উপর প্রযুক্ত বল এবং বলের দিকে বস্তুর অতিক্রান্তদূরত্বের গুণফল দ্বারা কাজ পরিমাপ করা হয়। সুতরাং,
কাজ = বল × বলের দিকে অতিক্রান্ত দূরত্ব।


কোনো বস্তুর উপর F বল প্রয়োগে যদি বস্তুটি বলের দিকে s দূরত্ব অতিক্রম করে (চিত্র ৪.১) তবে কৃত কাজ W হবে,
W= Fs ....................(৪.১)
কাজের কোনো দিক নেই। কাজ একটি স্কেলার রাশি।
কাজের মাত্রা: কাজের মাত্রা হবে বল × সরণের মাত্রা
কাজ = বল × সরণ = ভর × ত্বরণ × সরণ







[W]==

কাজের একক: বলের একককে দূরত্বের একক দিয়ে গুণ করলে কাজের একক পাওয়া যায়। যেহেতু বলের একক নিউটন (N) এবং দূরত্বের একক হলো মিটার (m), সুতরাং কাজের একক হবে নিউটন-মিটার (Nm)। একে জুল বলা হয়। জুলকে J দিয়ে প্রকাশ করা হয়। কোনো বস্তুর উপর এক নিউটন বল প্রয়োগের ফলে যদি বস্তুটির বলের দিকে এক মিটার সরণ হয় তবে সম্পন্ন কাজের পরিমাণকে এক জুল বলে।
1J+ 1Nm
যদি বল প্রয়োগের ফলে বস্তু বলের দিকে সরে যায় তাহলে সেই কাজকে বলের দ্বারা কাজ বলে।
একটি ডাস্টার টেবিলের উপর থেকে মেঝেতে ফেলে দিলে ডাস্টারটি অভিকর্ষ বলের প্রভাবে নিচের দিকে পড়বে। এক্ষেত্রে অভিকর্ষ দ্বারা কাজ হয়েছে।
যদি বল প্রয়োগের ফলে বস্তু বলের বিপরীত দ

পদার্থের অবস্থা ও চাপ


পদার্থের অবস্থা ও চাপ
 Share
সূচিপত্র

ভৌত রাশি ও পরিমাপ
গতি
বল
কাজ, ক্ষমতা ও শক্তি
পদার্থের অবস্থা ও চাপ
বস্তুর উপর তাপের প্রভাব
তরঙ্গ ও শব্দ
আলোর প্রতিফলন
আলোর প্রতিসরণ
দশম অধ্যায় স্থিরতড়িৎ
একাদশ অধ্যায় চল তড়িৎ
তড়িতের চৌম্বক ক্রিয়া
আধুনিক পদার্থবিজ্ঞান ও ইলেকট্রনিক্স
জীবন বাঁচাতে পদার্থবিজ্ঞান
সূত্রাবলি


[আমরা পদার্থের তিনটি অবস্থার কথা জানি-কঠিন, তরল ও বায়বীয়। পদার্থের আরো একটি অবস্থা আছে যার নাম প্লাজমা। তরল ও বায়বীয় পদার্থ সহজে প্রবাহিত হতে পারে বলে এদেরকে প্রবাহী বলে। প্রবাহী চাপ প্রদান করে। প্রবাহীর চাপকে কাজে লাগিয়ে অনেক কাজ সহজে করা যায়। পদার্থের একটি বিশেষ ধর্ম হলো স্থিতিস্থাপকতা। বর্তমান অধ্যায়ে আমরা এ সব বিষয় নিয়ে আলোচনা করব।]

==৫.১। চাপ ও ক্ষেত্রফল-
Pressure and Area==$ Insert formula here $

তুমি দুই পায়ে যত সহজে দাঁড়িয়ে থাকতে পার, এক পায়ে কী তা পার? হাইহিল জুতা পরে কেউ নরম মাটির উপর দিয়ে হাটলে জুতা মাটির মধ্যে দেবে যায়। আবার যদি কেউ চ্যাপ্টা তলাওয়ালা জুতা পরেন, তবে তা মাটিতে দাবে না। চাপের তারতম্যের কারণে যে এটা হয় তা আমরা দেখব।


কোনো বস্তুর প্রতি একক ক্ষেত্রফলের উপর লম্বভাবে প্রযুক্ত বলকে চাপ বলে। ধরা যাক A ক্ষেত্রেফলের উপর ক্রিয়ারত লম্বভাবে প্রযুক্ত বল F
তাহলে চাপ, অর্থাৎ, চাপ =
বল
ক্ষেত্রফল


লক্ষণীয় যে, ক্ষেত্রফল A যত কম হয়, চাপ P তত বেশি হয় এবং বল F যত বেশি হয়, চাপ P তত বেশি হয়।
উদাহরণ
i) একটি পেরেকের সূচালো মুখের ক্ষেত্রফল খুব কম। তাই কাঠ জাতীয় কোনো তলের উপর সূচালো মুখটি রেখে পেরেকের চওড়া মাথায় আঘাত করলে সূচালো মাথায় অপেক্ষাকৃত বেশি চাপ পড়ে, ফলে পেরেকটি সহজেই বস্তুটির মধ্যে ঢুকে যায়।
ii) ছুরির ধারালো প্রান্তের ক্ষেত্রফল খুব কম। তাই কোনো বস্তুর উপর ধারালো প্রান্তটিকে ধরে বল প্রয়োগ ছুরির প্রান্ত বরাবর বস্তুর উপর বেশি চাপ পড়ে। ফলে বস্তুটি সহজেই কাটা যায়।

নিজে কর: একটি তীক্ষ্ণ ধারালো আলপিন এবং একটি ভোতা আলপিন নিয়ে কাগজ ছিদ্র কর। কোনটি দিয়ে
ছিদ্র করা সহজ? ব্যাখ্যা কর।

তীক্ষ্ম ধারালো আলপিনের চওড়া মাথায় বল দিলে সরুমাথায় বেশি চাপ অনুভূত হয়।
ভোঁতা আলপিনের চওড়া মাথায় বল দিলে ভোঁতা মাথায় অত চাপ অনুভূত হয় না। ফলে ধারালো আলপিন দিয়ে কাগজ ছিদ্র করা সহজ।

যাচাই কর: সমান ইটের রাস্তায় খালি পায়ে হাঁটা আর ইটের খোয়ার উপর দিয়ে হাঁটা। কোনটি কষ্টসাধ্য। ব্যাখ্যা কর?
চাপের একক
বলের একককে ক্ষেত্রফলের একক দিয়ে ভাগ করলে চাপের একক পাওয়া যায়। অতএব চাপের একক । একে প্যাসকেল(Pa)বলে।
 1 Pa =
প্রতি 1m² ক্ষেত্রফলের উপর 1 N বল লম্বভাবে ক্রিয়া করলে যে চাপ হয় তাকে 1 Pa বলে।
গাণিতিক উদাহরণ ৫.১: জুতা পায়ে কোনো মহিলার ভর 50 kg। তার জুতার তলার ক্ষেত্রফল 200 Cm² হলে চাপ বের কর।

আমরা জানি,
চাপ,
= দেওয়া আছে, ভর, m= 50kg
বল, $ F= W= mg= 50kg\times 9.8ms^{-2} $
= 490 N
জুতার তলার ক্ষেত্রফল, A= 200 Cm²
$ 200\times 10^{-4} m^{2} $


ভভদ্দদ্দফদফ
৫.২। ঘনত্ব-
DensityEdit
কোনো বস্তু যে জায়গা জুড়ে থাকে তাকে এর আয়তন বলে। সমান আয়তনের এক টুকরা কর্ক আর এক টুকরা লোহা পানিতে ছেড়ে দিলে দেখা যাবে কর্কের টুকরা ভেসে আছে আর লোহার টুকরা ডুবে গেছে।সাধারণভাবে বলা যায় কর্কের চেয়ে লোহার ঘনত্ব বেশি তাই ডুবে গেছে। আসলে আয়তন সমান হলেও যার ঘনত্ব বেশি সেটি ভারী আর যার ঘনত্ব কম সেটি হালকা। কোনো বস্তুর একক আয়তনের ভরকে তার উপাদানের ঘনত্ব বলে। ঘনত্ব পদার্থের একটি সাধারণ ধর্ম। ঘনত্ব বস্তুর উপাদান ও তাপমাত্রার উপর নির্ভরশীল।
ঘনত্বকে  দ্বারা প্রকাশ করা হয়। m ভরের কোনো বস্তুর আয়তন v হলে, ঘনত্ব  হবে।
= =
বস্তুর ভর
বস্তুর আয়তন
 .................... (5.2)

ঘনত্বের একক

কাজ: দুটি জগ নাও যাদের আয়তন সমান। একটি জগ পানি দ্বারা ভর এবং একটি মধু দ্বারা পূর্ণ কর। হাত দিয়ে উঠাও।
কোনটি ভারী মনে হচ্ছে?

মধু ভর্তি জগটি বেশি ভারী মনে হবে কারণ মধুর ঘনত্ব বেশি।

কয়েকটি পদার্থ ও তাদের ঘনত্ব:

পদার্থ পদার্থ ঘনত্ব
পদার্থ পদার্থ ঘনত্ব

বায়ু 1.29 পানি (4°Cএ) 1000
কর্ক 250 লোহা 7,800
গ্লিসারিন 1260 রুপা 10,500
বরফ 920 সোনা 19,300
তোমরা নিশ্চয়ই মৃত সাগরের (Dead Sea)নাম শুনেছো। এটা জর্ডানে অবস্থিত। লবণ ও অন্যান্য অপদ্রব্য মিশ্রিত থাকার জন্য এই সাগরের পানির ঘনত্ব এত বেশি যে মানুষ সেখানে ডুবে না।
দৈনন্দিন জীবনে ঘনত্বের ব্যবহার: বিভিন্ন অনুষ্ঠানের উদ্বোধনীতে বেলুন উড়ানো হয়। এই বেলুনের মধ্যে হাইড্রোজেন গ্যাস থাকে। হাইড্রোজেন গ্যাসের ঘনত্ব বায়ুর ঘনত্বের চেয়ে বেশ কম। তাই এই গ্যাসভর্তি হালকা বেলুন সহজে উপরের দিকে উঠে যায়।
বিদ্যুৎ চলে গেলে আমরা অনেকেই আই.পি.এস ব্যাবহার করে থাকি। এতে বড় ব্যাটারি থাকে। গাড়িতে বা ম

বস্তুর উপর তাপের প্রভাব


বস্তুর উপর তাপের প্রভাব
 Share
সূচিপত্র

ভৌত রাশি ও পরিমাপ
গতি
বল
কাজ, ক্ষমতা ও শক্তি
পদার্থের অবস্থা ও চাপ
বস্তুর উপর তাপের প্রভাব
তরঙ্গ ও শব্দ
আলোর প্রতিফলন
আলোর প্রতিসরণ
দশম অধ্যায় স্থিরতড়িৎ
একাদশ অধ্যায় চল তড়িৎ
তড়িতের চৌম্বক ক্রিয়া
আধুনিক পদার্থবিজ্ঞান ও ইলেকট্রনিক্স
জীবন বাঁচাতে পদার্থবিজ্ঞান
সূত্রাবলি


[তাপ একপ্রকার শক্তি যা পদার্থের অণুর গতির সাথে সম্পর্কিত। তাপমাত্রা হচ্ছে তাপশক্তি কোন দিকে প্রবাহিত হবে তার একটি নির্দেশক। তাপ প্রয়োগে বা অপসারণে কঠিন পদার্থের আকারের পরিবর্তন ঘটে, তরল পদার্থের আয়তন পরিবর্তিত হয় এবং বায়বীয় পদার্থের আয়তন ও চাপের পরিবর্তন ঘটে। তাপ প্রয়োগে বা অপসারণে পদার্থ এক অবস্থা থেকে অন্য অবস্থায় রূপান্তরিত হয়। বস্তুর উপর তাপের এ সকল প্রভাব এই অধ্যায়ে আলোচনা করা হবে।]

৬.১ তাপ ও তাপমাত্রা
Heat and temperatureEdit
তাপ:
তাপ হলো এক প্রকার শক্তি যা ঠান্ডা ও গরমের অনুভূতি জাগায়। তাপ উষ্ণতর বস্তু থেকে শীতলতর বস্তুর দিকে প্রবাহিত হয়। সুতরাং উষ্ণতার পার্থক্যের জন্য যে শক্তি এক বস্তু থেকে অন্য বস্তুতে প্রবাহিত হয় তাকে তাপ বলে। পদার্থের অণুগুলো সব সময় গতিশীল অবস্থায় থাকে। তাই এদের গতিশক্তি আছে। কোনো পদার্থের মোট তাপের পরিমাণ এর মধ্যস্থিত অণুগুলোর মোট গতিশক্তির সমানুপাতিক। কোনো বস্তুতে তাপ প্রদান করা হলে অণুগুলোর গতি বেড়ে যায় ফলে গতিশক্তিও বেড়ে যায়।
তাপের একক: SI পদ্ধতিতে তাপের একক হলো জুল (J)। পূর্বে তাপের একক হিসাবে ক্যালরি (Cal) ব্যবহৃত হতো। ক্যালরি এবং জুলের মধ্যে সম্পর্ক হলো 1 Cal = 4.2 J।


কাজ:
টেবিলে রক্ষিত তিনটি পাত্রে A, B, C লেবেল দাও। পাত্রগুলোর A-তে কক্ষ তাপমাত্রার পানি এবং C-তে বেশ গরম পানি (তবে তোমার হাতে সহনীয়) নাও। B-তে খানিকটা গরম ও কক্ষ তাপমাত্রার পানি মেশাও। এবার A-পাত্রে তোমার ডান হাত এবং C- পাত্রে বাম হাত ডুবাও। এক মিনিট পর হাত দুটি উঠাও এবং একসাথে দুই হাত B-পাত্রে ডুবাও। এবার তোমার দুই হাতের অনুভূতি কী ?

যদিও C- পাত্রে একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রার পানি আছে তবুও ডান হাতে গরম এবং বাম হাতে ঠান্ডা অনুভূত হবে। কারণ ডান হাত আগে যে পানির মধ্যে ডুবানো ছিল তার চেয়ে Bএর পানির তাপমাত্রা বেশি। অনুরূপভাবে বাম হাতে ঠান্ডা অনুভূত হবে কারণ বাম হাত আগে যে পানির মধ্যে ডুবানো ছিল তার চেয়ে Bএর পানির তাপমাত্রা কম।
তাপমাত্রা
তাপমাত্রা হচ্ছে কোনো বস্তুর এমন এক তাপীয় অবস্থা যা নির্ধারণ করে ঐ বস্তুটি অন্য বস্তুর তাপীয় সংস্পর্শে এলে বস্তুটি তাপ হারাবে না গ্রহণ করবে।


তাপমাত্রাকে তরলের মুক্ত তলের সাথে তুলনা করা যেতে পারে। আমরা জানি উচ্চতর তল থেকে তরল সর্বদা নিম্নতর তলের দিকে প্রবাহিত হয়। চিত্রে A পাত্রের তরলের উচ্চতা B পাত্রের তরলের উচ্চতার চেয়ে বেশি। কিন্তু A পাত্রে তরলের পরিমাণ কম এবং Bপাত্রে তরলের পরিমাণ বেশি। স্টপ কক ঝখুলে দিলে A পাত্র থেকে B পাত্রে তরল প্রবাহিত হতে থাকবে যতক্ষণ না উভয় পাশে তরলের উচ্চতা সমান হয়। তেমনিভাবে তাপীয় সংযোগ স্থাপন করলে উষ্ণতর বস্তু থেকে শীতলতর বস্তুতে তাপ প্রবাহিত হয় যতক্ষণ না উভয়ের তাপমাত্রা সমান হয়।
যে বস্তুর তাপমাত্রা বেশি সে তাপ হারায় আর যে বস্তুর তাপমাত্রা কম সে তাপ গ্রহণ করে। তাপমাত্রা পরিমাপের যন্ত্রের নাম থার্মোমিটার।
তাপমাত্রার একক: আন্তর্জাতিক পদ্ধতিতে তাপমাত্রার একক কেলভিন (K)।
কেলভিন: যে নির্দিষ্ট তাপমাত্রা ও চাপে পানি তিন অবস্থাতেই অর্থাৎ বরফ, পানি এবং জলীয় বাষ্পরূপে অবস্থান করে তাকে পানির ত্রৈধবিন্দু (Triple Point) বলে। এই ত্রৈধবিন্দুর তাপমাত্রা 273 K ধরা হয়। পানির ত্রৈধবিন্দুর তাপমাত্রার ভাগ কে এক কেলভিন (1 K) বলে।

৬.২ পদার্থের তাপমাত্রিক ধর্ম
Thermometric properties of matterEdit
তাপমাত্রা পরিমাপের ক্ষেত্রে পদার্থের বিশেষ বিশেষ ধর্মকে কাজে লাগানো হয়। তাপমাত্রার তারতম্যের জন্য পদার্থের যে ধর্ম নিয়মিতভাবে পরিবর্তিত হয় এবং এই পরিবর্তন লক্ষ করে সহজ ও সূক্ষ্মভাবে তাপমাত্রা নিরূপন করা যায় সেই ধর্মকেই পদার্থের তাপমাত্রিক ধর্ম বলে। ঐ পদার্থকে তাপমাত্রিক পদার্থ বলে। থার্মোমিটারের মধ্যে তাপমাত্রিক পদার্থ ব্যবহার করা হয়।
তাপমাত্রিক ধর্মগুলো হচ্ছে পদার্থের আয়তন, রোধ, চাপ ইত্যাদি। পারদ থার্মোমিটারের ক্ষেত্রে কাচের কৈশিক নলের ভিতরে রক্ষিত পারদকে তাপমাত্রিক পদার্থ এবং পারদ দৈর্ঘ্যকে তাপমাত্রিক ধর্ম বলা হয়। একইভাবে গ্যাস থার্মোমিটারের ক্ষেত্রে ধ্রুব আয়তনে পাত্রে রক্ষিত গ্যাসকে তাপমাত্রিক পদার্থ এবং গ্যাসের চাপকে তাপমাত্রিক ধর্ম বলা হয়।

৬.৩: সেলসিয়াস, ফারেনহাইট ও কেলভিন স্কেলের মধ্যে সম্পর্ক
Relation between Celsius, Farenheit and Kelvin scaleEdit
কোনো বস্তুর তাপমাত্রা সঠিকভাবে নির্দেশ করার জন্য তাপমাত্রার একটি স্কেল প্রয়োজন। তাপমাত্র

সূত্রাবলি


সূত্রাবলি
 Share
ভৌত রাশি ও পরিমাপEdit
গতিEdit
দ্রুতি =
দূরত্ব
সময়

কোনো গতিশীল বস্তু যদি t সময়ে d দূরত্ব অতিক্রম করে, তাহলে দ্রুতি
v =

বেগের পরিবর্তনের হার, অর্থাৎ ত্বরণ, a -

u = আদি বেগ অর্থাৎ সময় গণনার শুরুতে যে বেগ
a = সুষম ত্বরণ
t = অতিক্রান্ত সময়
s = সরণ অর্থাৎ t সময়ে অতিক্রান্ত দূরত্ব
v = শেষ বেগ অর্থাৎ t সময় শেষে বস্তুর বেগ।


t


বলEdit
বস্তুর ভরবেগের পরিবর্তনের হার,

∵ত্বরণ, a=

ধরা যাক  ও  ভরবিশিষ্ট দুটি বস্তু A ও B যথাক্রমে এবং  বেগ নিয়ে একই সরল রেখা বরাবর চলছে। ধরা যাক A ও B -এর পরিবর্তিত বেগ যথাক্রমে  ও । ক্রিয়া ও প্রতিক্রিয়ার ফলে A ও B বস্তু দুটির ত্বরণ যথাক্রমে ও  হলে,
বা,
অতএব, A ও B বস্তু দুটির সংঘর্ষের পূর্বের ও পরের ভরবেগের সমষ্টি সর্বদা সমান থাকে। এটিই ভরবেগের সংরক্ষণ সূত্র।

কাজ, ক্ষমতা ও শক্তিEdit
কোনো বস্তুর উপর F বল প্রয়োগে যদি বস্তুটি বলের দিকে s দূরত্ব অতিক্রম করে (চিত্র ৪.১) তবে কৃত কাজ W হবে,




গতিশক্তি = ½ ভর × (বেগ)2
= ½ mv²

বিভব শক্তি = বস্তুর ওজন × উচ্চতা = mgh



পদার্থ শক্তিতে রূপান্তরিত হলে যদি ঊপরিমাণ শক্তি পাওয়া যায়, তাহলে
E= mc²
এখানে m হচ্ছে শক্তিতে রূপান্তরিত ভর এবং c হচ্ছে আলোর বেগ যা 3× এর সমান।


ক্ষমতা =
কাজ
সময়

কোনো ব্যক্তি বা যন্ত্র দ্বারা t সময়ে W পরিমাণ কাজ সম্পন্ন হলে বা শক্তি রূপান্তরিত হলে ক্ষমতা P হবে P=

ক্ষমতা =
কাজ
সময়
=
বল×সরণ
সময়
 =
ভর×ত্বরণ×সরণ
সময়

=
ভর×সরণ×সরণ
সময়²×সময়
=
ভর×সরণ³
সময়³


কর্মদক্ষতা, =
লভ্য কার্যকর শক্তি
মোট প্রদত্ত শক্তি
× 100%

পদার্থের অবস্থা ও চাপEdit
কোনো বস্তুর প্রতি একক ক্ষেত্রফলের উপর লম্বভাবে প্রযুক্ত বলকে চাপ বলে। ধরা যাক A ক্ষেত্রেফলের উপর ক্রিয়ারত লম্বভাবে প্রযুক্ত বল F
তাহলে চাপ, অর্থাৎ, চাপ =
বল
ক্ষেত্রফল



ঘনত্বকে  দ্বারা প্রকাশ করা হয়। m ভরের কোনো বস্তুর আয়তন v হলে, ঘনত্ব  হবে।
= =
বস্তুর ভর
বস্তুর আয়তন

ঘনত্বের একক

ধরা যাক, পাত্রের ভূমির ক্ষেত্রফল = A
তরলের ঘনত্ব =
তরলের গভীরতা = h
অভিকর্ষজ ত্বরণ = g
চাপ, P= h  g

বস্তুর উপর তাপের প্রভাবEdit
তারপর সেলসিয়াস, ফারেনহাইট ও কেলভিন স্কেলে দাগাঙ্কিত তিনটি থার্মোমিটার পাঠ যথাক্রমে C, F এবং K ।





 তাপমাত্রায় কোনো দণ্ডের দৈর্ঘ্য তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে হলে শেষ দৈর্ঘ্য = ,
দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি=
এবং তাপমাত্রা বৃদ্ধি=
দৈর্ঘ্য প্রসারণ সহগ a দ্বারা প্রকাশ করা হয় যার রাশিমালা

=
দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি
আদি দৈর্ঘ্য ×তাপমাত্রার বৃদ্ধি



 তাপমাত্রায় কোনো কঠিন পদার্থের পৃষ্ঠের আদি ক্ষেত্রফল=A1
তাপমাত্রা বৃদ্ধিকরে  করলে শেষ ক্ষেত্রফল= A2
সুতরাং তাপমাত্রা বৃদ্ধি=
ক্ষেত্রফল বৃদ্ধি=

ক্ষেত্র প্রসারণ সহগকে   দ্বারা প্রকাশ করা হয় যার রাশিমালা

 ... ... ... ... ... ... ... ... (6.3)

=
ক্ষেত্রফল বৃদ্ধি
আদি ক্ষেত্রফল× তাপমাত্রার বৃদ্ধি




কোনো কঠিন পদার্থের আদি আয়তন  এবং আদি তাপমাত্রা ।
এর তাপমাত্রা বাড়িয়ে যখন  করা হলো তখন আয়তন বৃদ্ধিপেয়ে  হলো। সুতরাং আয়তন বৃদ্ধি= । তাপমাত্রা বৃদ্ধি= ।
আয়তন প্রসারণ সহগকে  দ্বারা প্রকাশ করা হয় যার রাশিমালা নিম্নরুপ,

=
আয়তন বৃদ্ধি
আদি আয়তন× তাপমাত্রার বৃদ্ধি


এদের মধ্যে সম্পর্ক:  এবং



কোনো বস্তুর তাপমাত্রা বাড়াতে ধরা যাক Q পরিমাণ তাপ লাগে। সুতরাং 1K তাপমাত্রা বাড়াতে তাপ লাগে
=।
সুতরাং তাপধারণ ক্ষমতা, C=


আপেক্ষিক তাপ S হলে,  .... .... .... .... .... (6.7)
এখানে, C= তাপধারণ ক্ষমতা,
Q= শেষিত তাপ
= তাপমাত্রা পরিবর্তন
m= বস্তুর ভর
একক: আপেক্ষিক তাপের একক


তাপধারণ ক্ষমতা= ভর × আপেক্ষিক তাপ
সুতরাং, আপেক্ষিক তাপ=
তাপধারণ ক্ষমতা
ভর


তরঙ্গ ও শব্দEdit
পর্যায়কাল T হলে, কম্পনাঙ্ক
তরঙ্গদৈর্ঘ্য  হলে, তরঙ্গ বেগ v=
গভীরতা নির্ণয়
পানিপৃষ্ঠের গভীরতা = h,
শব্দ উৎপন্ন করা ও প্রতিধ্বনি শোনার মধ্যবর্তী সময় = t,
শব্দের বেগ = v,
এখন শব্দ উৎপন্ন হওয়ার পর পানি পৃষ্ঠে প্রতিফলিত হয়ে শ্রোতার কাছে ফিরে আসতে যেহেতু 2h দূরত্ব অতিক্রম করে
অতএব,2h = v×t
বা h= v×t/2।

আলোর প্রতিফলনEdit
কোনো নির্দিষ্ট মাধ্যমে আলো একটি নির্দিষ্ট বেগে চলে। শূন্যস্থানে এই বেগের মান,

যদি l দৈর্ঘ্যের একটি বস্তুর জন্য কোনো দর্পণ বা লেন্সে l' দৈর্ঘ্যের একটি প্রতিবিম্ব গঠিত হয় তবে ঐ বস্তুর বিবর্ধন হবে l' ও l এর অনুপাতের সমান।
অর্থাৎ,

আলোর প্রতিসরণEdit
আলোকরশ্মি যদি a মাধ্যম থেকে b মাধ্যমে প্রবেশ করে তবে, a মাধ্যমের সাপেক্ষে b মাধ্যমের আপেক্ষিক প্রতিসরণাঙ্ক, (চিত্র ৯.৫)



ক্ষমতা P এবং ফোকাস দূরত্ব  এর মধ্যে একটি সম্পর্ক আছে। সম্পর্কটি হচ্ছে,

দশম অধ্যায় স্থিরতড়িৎEdit
ধরা যাক, দুটি আধানের পরিমান যথাক্রমে q1 ও q2 এবং এদের মধ্যবর্তী দূরত্ব d (চিত্র ১০.৯)। এদ

জীবন বাঁচাতে পদার্থবিজ্ঞান


পদার্থবিজ্ঞানের সাথে জীববিজ্ঞানের সম্পর্ক স্থাপন করে একটি নতুন বিষয়ের বিকাশ ঘটেছে তার নাম জীবপদার্থবিজ্ঞান। বেঁচে থাকার জন্য আমাদের দরকার সুস্থ, সবল ও নিরোগ দেহ। সুস্থ থাকার জন্য প্রয়োজন সঠিক চিকিৎসা। চিকিৎসা বিজ্ঞানে রোগ নির্ণয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পদার্থবিজ্ঞানের বিভিন্ন তত্ত্ব ও নীতির উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে নানা ধরনের চিকিৎসা যন্ত্রপাতি। এসকল যন্ত্রপাতি পদার্থবিজ্ঞানের কোনো নীতি বা তত্ত্বকে কাজে লাগিয়ে কাজ করে। এমন কিছু যন্ত্রপাতি সম্পর্কে এ অধ্যায়ে আলোচনা করা হবে।]



১৪.১ জীবপদার্থবিজ্ঞান এর ভিত্তি
Background of bio-physicsEdit
জীবপদার্থবিজ্ঞান হলো এমন এক বিজ্ঞান যা বিজ্ঞানের অনেকগুলো শাখার উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। জীবপদার্থবিজ্ঞানে জীববিজ্ঞানের কোনো ব্যবস্থাকে অধ্যয়নের জন্য ভৌতবিজ্ঞানের তত্ত্ব ও পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। জীববিজ্ঞান হলো জীবজগৎ অধ্যয়নের বিজ্ঞান। কীভাবে উদ্ভিদ ও প্রাণী খাদ্য আহরণ করে, যোগাযোগ রক্ষা করে, পরিবেশ সম্পর্কে উপলব্ধি লাভ করে এবং বংশবৃদ্ধি করে এ বিষয়গুলো জীববিজ্ঞানে বর্ণনা করা হয়। অন্যদিকে প্রকৃতি যে সব গাণিতিক নিয়ম মেনে চলে সেগুলো হলো পদার্থবিজ্ঞানের আলোচ্য বিষয়। দীর্ঘদিন একটি ধারণা বিজ্ঞানীরা পোষণ করে এসেছেন যে জীবজগতের নিয়ম ও ভৌতজগতের নিয়ম আলাদা। কিন্তু ভৌতবিজ্ঞান ও জীববিজ্ঞানের অগ্রগতির ভিতর দিয়ে এই দুই আপাত ভিন্ন শৃঙ্খলার মধ্যে গভীর মিল পাওয়া গেছে। প্রথমে পদার্থবিজ্ঞান ও জীববিজ্ঞান দুটি ভিন্ন বিষয় হিসেবে বিকাশ লাভ করেছে। বিজ্ঞানের অগ্রগতির মধ্য দিয়ে এই দুই বিষয়ের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক ও সমন্বয় অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। আগে মনে করা হতো প্রাণিজগত ভিন্ন এক নিয়ম চলে এবং জড় পদার্থের ক্ষেত্রে শুধু ভৌতবিজ্ঞানের নিয়মগুলো প্রযোজ্য। কিন্তু আমরা এখন জানি প্রাণিদেহকে অনেক দিক থেকে যন্ত্রের সঙ্গে তুলনা করা যায় এবং প্রাণিদেহের অনেক আচরণকে ভৌত নিয়ম দ্বারা ব্যাখ্যা করা সম্ভব। বস্তুত পদার্থবিজ্ঞানের নিয়মগুলো সার্বজনীন। ফলে শুধু জড়জগত নয়, প্রাণিজগতকেও পদার্থবিজ্ঞানের নিয়মে অনেক ক্ষেত্রে ব্যাখ্যা করা সম্ভব। এটিই জীবপদার্থবিজ্ঞনের ভিত্তি।

জীবপদার্থবিজ্ঞানের চ্যালেঞ্জ হলো কীভাবে জীবনের নানা জটিলতাকে পদার্থবিজ্ঞানের সহজ নিয়মের ভিত্তিতে ব্যাখ্যা করা যায়। গণিত এবং পদার্থবিজ্ঞান ব্যবহার করে জীবনের নানাবিধ রহস্য অনুসন্ধান ও বিভিন্ন ঘটনা বিশ্লেষণের মাধ্যমে এর গভীরে প্রবেশ করার শক্তিশালী মাধ্যম হলো জীবপদার্থবিজ্ঞান। জীবপদার্থবিজ্ঞান হলো জীববিজ্ঞান এবং পদার্থবিজ্ঞানের মধ্যে সেতুবন্ধ স্বরূপ।

১৪.২ জগদীশচন্দ্র বসুর অবদান
Contributions of Jagadish Chandra BoseEdit
আচার্য স্যার জগদীশচন্দ্র বসু ছিলেন একাধারে একজন প্রখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানী, অন্যদিকে একজন জীববিজ্ঞানী। আমদের উপমহাদেশে তিনিই প্রথম আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত বিজ্ঞানী। বসু পরিবারের আদি নিবাস ছিল ঢাকা জেলার অন্তর্গত বিক্রমপুরের রাঢ়িখাল নামক গ্রামে। ১৮৫৮ সালের ৩০ নভেম্বর জগদীশচন্দ্র বসু ময়মনসিংহে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা ভগবানচন্দ্র বসু ফরিদপুর জেলার একজন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন। প্রথমে ফরিদপুরের গ্রামীণ বিদ্যালয়ে মাতৃভাষায় লেখাপড়া শুরু করেন। পরে কোলকাতার হেয়ার স্কুল ও সেন্ট জেভিয়ার স্কুল ও কলেজে তাঁর ছাত্রজীবন অতিবাহিত হয়। ১৮৮০ সালে বি.এ পাশ করার পর ঐ বছরই তিনি উচ্চ শিক্ষার জন্য ইংল্যাণ্ড যান। ইংল্যাণ্ডে তার শিক্ষা জীবন ছিল ১৮৮০-১৮৮৪ সাল পর্যন্ত। ঐ সময়ে তিনি ক্যাম্ব্র্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিজ্ঞানে অনার্সসহ বি.এ এবং লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি.এসসি. ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৮৮৫ সালে তিনি প্রেসিডেন্সি কলেজে পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ে অধ্যাপনা শুরু করেন। প্রেসিডেন্সি কলেজে গবেষণার তেমন সুযোগ না থাকা সত্ত্বেও তিনি সেখানে গবেষণার কাজ চালিয়ে যান। দিনের বেলায় সময় না থাকায় বেশিরভাগ সময় তাঁকে রাতের বেলায় গবেষণার কাজ করতে হতো।

গবেষণাগারে তিনি কীভাবে দূরবর্তী স্থানে তারের সাহায্য ছাড়া কোনো রেডিও সংকেতকে পাঠানো যায় এ বিষয়ে বিস্তর গবেষণা করেন এবং সফল হন। ১৮৯৫ সালে তিনি ইতিহাসে প্রথম বারের মতো দূরবর্তী স্থানে বিনা তারে


রেডিও সংকেত প্রেরণ করে জনসমক্ষে দেখান। মাইক্রোওয়েভ গবেষণার ক্ষেত্রে তাঁর উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে। তিনিই প্রথম উৎপন্ন তরঙ্গের তরঙ্গদৈর্ঘ্যকে মিলিমিটার (প্রায় ৫ মিলিমিটার) পর্যায়ে নামিয়ে আনতে সক্ষম হন। তিনিই প্রথম রেডিও সংকেতকে শনাক্ত করার কাজে অর্ধপরিবাহি জংশনের ব্যবহার করেন। এই আবিষ্কার থেকে ব্যবসায়িক সুবিধা নেওয়ার পরিবর্তে তিনি তাঁর আবিষ্কারকে সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেন, যেন অন্যরা এই গবেষণাকে আরো সমৃদ্ধ করার সুযোগ পায়। পরবর্তীকালে জগদীশচন্দ্র বসু উদ্ভিদ শারীরতত্ত্বের উপর অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ